জয়পুরহাটে বোরো ধান কাটা-মাড়াই উৎসব চলছে

নিউজ   ডেস্ক:: জয়পুরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার সর্বত্র এখন চলছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই উৎসব। ফলন ভাল, বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মূখে হাসির ঝিলিক।

জেলায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন সোনালি ধান। ধান ঘরে তোলা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। বুধবার পর্যন্ত শতকরা ৫৮ ভাগ বোরো ধান কাটা-মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়।

কৃষকরা জানান, সার, বীজ, কীটনাশক, পানি সেচ ও লেবারসহ প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৮-৯ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। ধানের ফলন হয়েছে জাত ভেদে বিঘা প্রতি ২৮-৩৩ মণ । প্রতি মণ ধান উৎপাদনে সার, কীটনাশক, লেবার ও পানি সেচসহ খরচ পড়েছে সাড়ে ৫ শ টাকার মতো। জেলার ধানের বাজার হিসেবে খ্যাত পুরানাপৈল, জামালগঞ্জ ও বটতলী বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে সাড়ে ৮ শ থেকে ৯ শ টাকা মণ (৪০ কেজি)। দাম ভাল পাওয়ায় আনন্দিত বলে জানান কৃষকরা। অভ্যন্তরীণ খাদ্য মজুদের জন্য সরকারি ভাবে এবার ধানের বদলে চাল সংগ্রহ করা হবে। ইতিমধ্যে মিল মালিকদের সঙ্গে ১৮ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের চুক্তি সম্পাদন করেছে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ।

জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল গ্রামের কৃষক আফতাব উদ্দিন, আশরাফ আলী, সিরাজুল ইসলাম, কোমরগ্রামের জমির উদ্দিন, সামসুল আলম, আব্দুল লতিফ জানান, জমিতে বোরো ধানের ফলন এবার ভাল হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভাল কিন্তু মজুরের সংকট থাকায় মাড়াইয়ের খরচ এবার কিছুটা বেশী পড়ছে বলে জানান কৃষকরা। এক বিঘা জমির ধান কাটতে খাওয়া-দাওয়া সহ এবার ৪ হাজার থেকে চার হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে মজুরদের।

জেলায় চাষ হওয়া উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের বোরো ধানের মধ্যে রয়েছে ব্রি-ধান-১৬, ২৮, ২৯, ৫০, ৫৮, ৬২, ৬৩ এবং ৬৪। এ ছাড়াও রয়েছে জিরাশাইল, কাজল লতা ও মিনিকেট ধান । হাইব্রিড জাতের মধ্যে রয়েছে এস এল-৮, তেজ, তেজ গোল্ড, হিরা-২, ৩, ৪, ৫, এসিআই-১, ২, ৩, ৪ ও ৫। এ ছাড়াও রয়েছে মানিক রতন, বিজলী, স্পাহানী, আলোড়ন, জাগড়ন, তিনপাতা সুপার, সুফলা, দুর্বার, সাথী।

স্থানিয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় জানান, চলতি ২০১৭-২০১৮ মৌসুমে জেলায় এবার ৭১ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ১৫০ হেক্টর। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন। গত ২০১৬-২০১৭ মৌসুমে জেলায় ৭২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। এতে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন। যা জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *