রমজানেও খেলোয়াড়দের ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব

স্পোর্টস ডেস্ক:: সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য শুরু হচ্ছে রজমান মাস। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং যাবতীয় ভোগবিলাস থেকে বিরত থাকাই হলো রোজা। ইসলামের বিধান অনুসারে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রোজা ফরজ।

 

যারা পেশাদার খেলোয়াড়, তাদের জন্যও রমজানের রোজা রেখে খেলাধুলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। এমনকি তাদের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য পরিমিত খাবার গ্রহণ এবং অনুশীলনের সময় পরিবর্তন করে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আইটিভির দিস মর্নিং অনুষ্ঠানের চিকিৎসক ও উপস্থাপক ড.রঞ্চ সিংয়।

তিনি বলেন, রোজার মাসে রাতের বেলায় যে সময়টায় উপবাস করা হয় না, তখন ঠিকমতো খাবার খেতে হবে। এ সময় হালকা শরীরচর্চা করতে হবে।

তবে ঘুম যেন যথেষ্ট হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ সারা দিন সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে হলে চাহিদা অনুসারে ঘুমাতে হবে।

ব্রিটিশ বক্সার আমির খান শরীরের ধকল কমাতে প্রায় প্রশিক্ষণের পরিমাণ কমিয়ে দেন।

ডা. রঞ্চের পরামর্শ হলো, নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত কাজ করা যাবে না। এক্ষেত্রে অতিরক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন এই ব্রিটিশ চিকিৎসক।

কিন্তু শরীরের ওপর দিয়ে বড় ধকল এড়াতে কী রকম পরিশ্রম করা যেতে পারে?

ডা.রঞ্চের উপদেশ হলো, দ্রুত হাঁটা, আস্তে আস্তে দৌড়ানো ও হালকা অ্যারোবিক ব্যায়াম করা যেতে পারে। তিনি শরীরচর্চার সময়ের ওপর জোর দিয়েছেন।

ব্রিটিশ এ চিকিৎসক বলেন, অনেকে আছেন, খুব ভোরে সূর্য ওঠার আগে ব্যায়াম করতে স্বস্তিবোধ করেন। তারা এভাবে রাত পোহানোর আগেই নিজের শরীর চর্চার কাজটি সেরে নিতে পারেন।

তিনি এটাকে সবচেয়ে ভালো উপায় বলেও বর্ণনা করেন। এ সময়ে ব্যায়াম করলে পেশিগুলো প্রয়োজনীয় শক্তি অর্জন করে নিতে পারে।

কিন্তু খুব ভোরে শরীরচর্চা করা সবার জন্য উপযুক্ত সময় নাও হতে পারে। এখন অনেক জিম ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। এছাড়া ভোরে বাসায় বসেও ব্যায়ামের কাজটি করে নেয়া যেতে পারে।

ফজরের নামাকে মসজিদে হেঁটে যাওয়া, লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি বেয়ে উঠেও আমাদের নৈমিত্তিক ব্যায়ামের একটা অংশ সেরে ফেলতে পারি।

খাবারের সময় শর্করা, তৈল জাতীয় খাবার ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ ডা.রঞ্চের।

তিনি বলেন, খাবারে বৈচিত্র্য থাকতে হবে। যে খাবারগুলো আমরা বেশি খাই, সেগুলোতে ভারসাম্য আনতে হবে। শ্বেতসার, শর্করা, প্রোটিন ও চর্বিযুক্ত খাবারের কথা মাথায় রাখতে হবে। খাবারের তালিকায় প্রচুর খাবার ও শাকসবজি থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এমন সব খাবার খেতে হবে, যা অনেক বেশি সময় এনার্জি ধরে রাখতে পারবেন। এতে আপনি ক্ষুধা অনুভব করবেন কম, নিজের কাজগুলো ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারবেন।

ডা.রঞ্চ বলেন, আপনাকে অতিরিক্ত তৃষ্ণার কথাও ভাবতে হবে। কাজেই সাহরির আগে আপনাকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। কারণ আপনার পানি তৃষ্ণার প্রতি নির্ভর করে দিনের বেলায় নিজেকে কতটা সতেজ রাখত পারবেন।

ব্রিটেনের কেন্টের বাসিন্দা ইয়াসমিন খালিদ বলেন, তিনি জিমে যান ও শরীরচর্চার ক্লাসে অংশ নেন। তার জন্য রমজানে এটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু খাওয়া ও পানির অভাবে নয়, তার কষ্টের মূল কারণ তিনি ঘুমবঞ্চিত।

 

চার সন্তানের এই জননী বলেন, ঘুমের অভাব আমাকে খুব কষ্ট দেয়। আমি ভোর ৪টায় ঘুম থেকে জাগি, রান্না করি ও সাহরির পর নামাজ পড়ি। আমি বিশ্রামের জন্য মাত্র এক ঘণ্টা সময় পাই। এরপরই সন্তানদের স্কুলের জন্য প্রস্তুত করতে হয়। এরপর সারা দিন সংসারের কাজ ও স্কুল থেকে সন্তানদের নিয়ে আসার কাজটিও তাকে করতে হচ্ছে।

সেক্ষেত্রে ডা. রঞ্চ বলেন, রমজানে খাবারের মতোই ঘুমকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ মাসটিতে যারা ভালো ঘুম দিতে পারেন, তাদের খাবার কম টানে। কাজেই রাতে ভালো ঘুম দিতে পারলে উপবাসের সময় খাবারে প্রতি আপনার আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *