আত্মসমর্পন করেছে নির্বাচন কমিশন: রিজভী

নিউজ ডেস্ক:: নির্বাচন কমিশন নিজেদের সাংবিধানিক স্বাধীনতা অস্বীকার করে সরকারের কাছে পরাধীন হওয়ার জন্য আত্মসমর্পণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তফশীল ঘোষনার প্রর থেকেই সরকারি জয়োল্লাসের ধরণ থেকে বোঝা যাচ্ছিল নির্বাচনের দিন ভোটের পরিণতি কী হবে।

ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই ‘হাসিনা মার্কা’ নির্বাচনের স্বরুপ আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করেছে। ধানের শীষের এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, কয়েকদিন ধরে তাদের বাড়িতে বাড়িতে হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, মহিলা ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করাসহ আওয়ামী লীগের রক্তাক্ত নির্বাচন বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকার সমর্থিত টিভি চ্যানেলগুলোতেও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট সন্ত্রাস ও ভোট জালিয়াতির চিত্র প্রচারিত হয়েছে। সকল অভিযোগ স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তাদের গোচরে আনা হলেও, তারা এক চোখ বন্ধ করে কাজ করছে।

দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খুলনা নির্বাচন নিয়ে দ্বিতীয় দফা সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারেরই ফটোকপি। সরকারের ‘কম্প্রোমাইজড কপি’। সেই জন্য তাদের কারনে একতরফা নির্বাচনের জয়জয়কার। তাই আওয়ামী ভোট-সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া, ভোটারদের ভোট কেড়ে নিতে বাধাহীন। এখন পর্যন্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভয়, ভীতি আর রক্তচ্ছটায় পরিব্যাপ্ত। খুলনা সিটি নির্বাচনে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, খুলনার দৌলতপুরের ৪ নং ওয়ার্ডের দেয়ানা উত্তর পাড়া ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায় আওয়ামী সমর্থকরা। ২১ নং ওয়ার্ডের উদয়ন বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সশস্ত্র ক্যাডাররা ভোটারদের বের করে দিচ্ছে। ২৪ নং ওয়ার্ডের গনি বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতিকের সমর্থকদের বের করে দিয়েছে। ৩১ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র-২৭৭ ও ২৭৮ লবনচোরা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী আসাদুজ্জামান রাসেলের নেতৃত্বে কেন্দ্র দখল করে নৌকা মার্কায় জাল ভোট চলছে। ২৪ নং ওয়ার্ডের ২০১ ও ২০২ নম্বর কেন্দ্র ইকবাল নগর বালিকা ভোট কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় জাল ভোট চলছে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডের ফাতেমা স্কুল কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় জাল ভোট কাটা হচ্ছে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ২৭৫, ২৭৬ নম্বর কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট ও ধানের শীষের কর্মীদের মারধর করে বের করে দিচ্ছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২১৭ নম্বর কেন্দ্রে দারুল কোরয়ান সিদ্দিকীয়া মাদরাসা কেন্দ্রে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপার নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারছে।

রিজভী বলেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গল্লামারী লায়ন্স স্কুল কেন্দ্রের সামনে যুবলীগ নেতা হাফিজের নেতৃত্বে কেন্দ্রটি সন্ত্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবাল নগর স্কুল কেন্দ্র ও সোনাপাতা স্কুল কেন্দ্রে কোন ব্যালট পেপার নেই। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোরেই ব্যালট কেটে বাক্সভর্তি করে রেখেছে। তিনি বলেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেয়া যাবে না, ভোট দিলেও প্রকাশ্যে সিল দিতে হবে বলে আওয়ামী ক্যাডাররা অস্ত্র হাতে হুমকি দিচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে থেকে বিএনপি নেতাকর্মী ও ভোটারদেরকে মারধর করে বের করে দিয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২৫, ২৬, ২৮ ও ৩১ নম্বর কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের সকল এজেন্টদের বের করে দিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। রিজভী বলেন, আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ১৮ নং ভোট কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট ও ভোটারদের বের করে দিয়েছে। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল গণি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারছে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডাররা।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২২০ নম্বর কেন্দ্র নুরানী বহুমুখী মাদরাসা থেকে ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়া খামার সরকারী প্রাথমি বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের সকল এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী সমর্থকরা কেন্দ্রটি দখলে নিয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *