দুই দিনের রিমান্ডে এমপি রানা

নিউজ ডেস্ক:: টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

শনিবার সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এমপি রানাকে টাঙ্গাইল নিয়ে এসে দুপুর থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল সদর আমলি আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম এমপি রানার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এমপি আমানুর রহমান খান রানা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি।

২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ও দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ এমপি রানাকে আনতে শনিবার সকালে কাশিমপুর কারাগারে যান।

কড়া পুলিশি প্রহরায় একটি মাইক্রোবাসে দুপুর পৌনে ২টায় তাকে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনা হয়। ওই কার্যালয়ের দ্বিতীয়তলায় রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুপুরে টাঙ্গাইল আনার পর খাওয়াদাওয়া শেষে পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক আমানুর রহমান খান রানার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।

টানা বিকাল পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে তিনি যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। রাতে তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশোক কুমার সিংহ এমপি রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ২ মে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয় দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামির জবানবন্দিতে আমানুর রহমান খান রানার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে এসেছে। তাই এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।

এদিকে এমপি রানাকে রিমান্ডে আনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সদর থানার চারদিকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সামনের রাস্তা দিয়ে যানবাহন ও লোকজন চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে।

এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন এমপি আমানুর রহমান খান রানার দিকনির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *