আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকারি খাতের শ্রম সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালে ‘ব্ল্যাক ব্লকস’ বলে পরিচিত চরম-বামপন্থি নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠীগুলো বিক্ষোভের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ডাকা বার্ষিক মে দিবসের বিক্ষোভে মুখোশ পরা ও হুডে মাথা ঢাকা প্রায় ১২০০ বিক্ষোভকারীও উপস্থিত ছিল।
মূল বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় মুখোশধারীরা দোকানপাটের জানালা ভাংচুর করে উস্তারলিজ স্টেশনের কাছে ম্যাকডোনাল্ডের একটি বিক্রয় কেন্দ্র আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা মূল বিক্ষোভ মিছিলটি ধরে রাখার চেষ্টা করেন।
দাঙ্গাকারীরা রাস্তায় থাকা অনেকগুলো গাড়িতে ও একটি গাড়ির শোরুমে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাস্তার পাশের দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে দেয়।
পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও জলকামান ব্যবহার করে দাঙ্গাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় দাঙ্গাকারীরা পথনির্দেশকগুলো বাঁকিয়ে নিচে নামিয়ে ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ চার জন আহত হন।
মুখ ঢেকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করেছেন ফ্রান্স সরকারের মুখপাত্র বেঞ্জামিন গ্লিভো। হুডে মাথা ঢাকা বিক্ষোভাকারীদের ‘গণতন্ত্রের শত্রু’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সংস্কার নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। রাষ্ট্র পরিচালিত রেলওয়ে এসএনসিএফ-কে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে রেল কর্মীরা সারা দেশজুড়ে তিন মাসের ধর্মঘট শুরু করেছে।
মার্চে হওয়া ধর্মঘটে রেল কর্মীদের সঙ্গ হাজার হাজার শিক্ষক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। তবে এসব সত্বেও নিজের পরিকল্পনা থেকে সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
মঙ্গলবার মে দিবসের বিক্ষোভে প্রায় ৫৫ হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নিয়েছে এবং মূল বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিবাদকারীরা শান্তিপূর্ণ ছিল বলে দাবি করেছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা আরো অনেক কম, প্রায় ২০ হাজার ছিল বলে দাবি করেছে।
গত সেপ্টেম্বরে ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবিত শ্রম সংস্কার পরিকল্পনার প্রতিবাদে দুই লাখ ২৩ হাজার বিক্ষোভকারী প্যারিসের রাস্তায় নেমে এসেছিল; সেই তুলনায় মে দিবসের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম ছিল বলে মন্তব্য বিবিসির।