ট্রাম্প-ম্যাক্রোঁর সম্পর্ক ইরান চুক্তি বাঁচাতে পারবে?

আন্তর্জাতিক  ডেস্ক:: ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বজায় রাখতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। পাশাপাশি ফ্রান্স ইরানের সঙ্গে করা আগের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ওয়াশিংটনে রয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

দুই নেতার মধ্যে প্রকাশ্যে ব্যক্তিগত উষ্ণতার একাধিক মুহূর্ত দেখা গেছে৷ করমর্দন, আলিঙ্গনের পাশাপাশি মৃদু চুম্বন, পিঠ চাপড়ানো, পরনের কোট ঝেড়ে দেবার মতো ঘটনাও ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷ ইউরোপের অন্য কোনো নেতার সঙ্গে ট্রাম্প এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেননি৷

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সুর সম্ভবত কিছুটা নরম করতে পেরেছেন ম্যাক্রোঁ৷ বর্তমান চুক্তির দুর্বলতা স্বীকার করে নিয়ে তিনি নতুন এক আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন৷

বর্তমান চুক্তি বাতিল না করে সেটিকে সম্প্রসারণ করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও গোটা অঞ্চলে সে দেশের প্রভাবে রাশ টানতে চান ম্যাক্রোঁ৷ বর্তমান চুক্তি অটুট রেখে ট্রাম্পেরও মুখরক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপের নেতারা।

ম্যাক্রোঁ স্পষ্ট এক প্রস্তাব পেশ করেছেন ট্রাম্পের কাছে। এ চুক্তি হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ বর্তমান চুক্তির মেয়াদ, অর্থাৎ ২০২৫ সাল পর্যন্ত ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর কড়া নজর রাখবে৷ তার পরেও নজরদারি শিথিল করা হবে না৷

এর মধ্যে সে দেশের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে রাশ টানতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে ইরানের প্রভাব কমাতে সেসব দেশের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানসূত্রের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে৷ তবে এমন এক বিস্তারিত চুক্তির আওতায় ইরান বাড়তি কী সুবিধা পাবে, তা উল্লেখ করা হয়নি৷

ট্রাম্প এই প্রস্তাবকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ ১২ই মে তিনি এই চুক্তি থেকে সরে আসার যে হুমকি দিয়েছেন, সে বিষয়ে মতবদলের কোনো লক্ষণ এখনো দেখাননি তিনি।

সম্প্রতি এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির কড়া সমালোচনা করেন৷ তার মতে, মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব প্রান্তেই সব সমস্যার পেছনে ইরানের হাত দেখতে পাওয়া যায়৷ সে দেশের সঙ্গে বৃহত্তর এক নতুন চুক্তির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ না-ও হতে পারে৷

ট্রাম্প ম্যাক্রোঁর প্রস্তাবে রাজি হলেও ইরান চুক্তির আরও দুই সাক্ষরকারী দেশ রাশিয়া ও চীন এমন মনোভাব মেনে নেবে কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷ ম্যাক্রোঁ যদিও বলেছেন, ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি বাতিল করবেন কিনা, সেটা তিনিও জানেন না৷

এদিকে শুক্রবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইরান প্রসঙ্গেও আলোচনা করবেন৷ তিনিও ট্রাম্পকে বর্তমান চুক্তি মেনে চলার পরামর্শ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে কট্টরপন্থি অংশ ইরানের প্রশ্নে জার্মানির ‘নরম’ মনোভাবের কড়া সমালোচনা করছে৷ তাদের অভিযোগ, জার্মানি এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে৷

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *