এবার এক সংবাদ পাঠিকার অভিযোগ ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে

নিউজ ডেস্ক:: পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ে লুকাতে ক্ষমতার অপব্যবহার ও নারী নির্যাতনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছিল পুলিশের তদন্ত কমিটি। তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশ থেকে প্রত্যাহারও করা হয়েছিল। কিন্তু থামানো যায়নি। এবার তাঁর বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন।

ওই সংবাদ পাঠিকা প্রথমে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রত্যাহার হওয়া অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান মুঠেফোনে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বাড়ির বাইরে বের হলে তাঁকে হেনস্থা করবেন ও অশ্লীল ছবি তৈরি করে প্রচার করবেন। ১০ এপ্রিল তিনি তাঁর নামে খোলা একটি ফেসবুক পেজের কথা জানতে পারেন। তিনি দেখতে পান, ওই পেজটি তাঁর নামে খোলা এবং সেখানে তাঁর ছবির সঙ্গে অশ্লীল ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে সংবাদ পাঠিকা অভিযোগ জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন।

জানতে চাইলে, বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম আজ মঙ্গলবার বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগও তদন্তে যুক্ত হয়েছে। তাঁরা মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না, তা জানতে চাইলে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছে।

ঘটনার শিকার ওই গণমাধ্যমকর্মী বলেন, এর আগেও প্রত্যাহার হওয়া অতিরিক্ত কমিশনার তাঁকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেছেন। তাঁর আশঙ্কা, মিজানুর রহমান প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ও তাঁর স্বামীর মুঠোফোন নম্বর অনুসরণ করেন। তাঁর স্বামীও এর আগে সাভার থানায় জিডি করেছেন। কথা বলার সময় ওই গণমাধ্যমকর্মী অনবরত কাঁদছিলেন। তিনি বলছিলেন, মিজানুর রহমানের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের ওঠা-বসা রয়েছে। এর আগে টিভি চ্যানেলের গাড়িতে করে বাড়ি ফেরার সময় হাতিরঝিলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। মিজানুর রহমান তাঁকে ফোন করে ৬৪ টুকরো করে ফেলার হুমকি দিয়েছেন, বলেছেন তাঁর মাথা জিরো পয়েন্টে ঝুলিয়ে রাখবেন। প্রাণভয়ে তিনি ও তাঁর স্বামী গত চার মাস ঘরবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। একমাত্র সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না।

মিজানুর রহমান ওই সংবাদ পাঠিকার কাছ থেকে কী চান, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিজানুর একজন বিকৃত রুচির মানুষ। তিনি নানা ছলছুতোয় নারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েন ও তাঁর ইচ্ছামতো চলতে বাধ্য করেন। মিজানুর তাঁকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন ওই নারী।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে মিজানুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর কোনো বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

এর আগে মরিয়ম আক্তার ইকো নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ের অভিযোগ করেন। গত ৮ জানুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তর মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পুলিশ সদর দপ্তর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মইনুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার শাহাবুদ্দীন কোরেশী ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মিয়া মাসুদ হোসেন। কমিটি মিজানুরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রমাণ পায় বলে জানা গেছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *