জ্ঞানের রাজ্যে ভ্রমণের জন্য তো কোনো পাসর্পোট ভিসা লাগেনা

দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক এবং জীবনমান উন্নয়ন প্রয়াসী সংস্থা ‘ইনোভেটর’ এর নির্বাহী সঞ্চালক, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক প্রনবকান্তি দেব এর যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে ‘গল্প-কথায় অভিজ্ঞতা বিনিময়’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর জিন্দাবাজারস্থ নজরুল একাডেমির মিলনায়াতনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক পেশাগত দক্ষতা বিনিময় করেন প্রণবকান্তি দেব।

গল্প-কথায় তার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা বর্ণণা করতে গিয়ে প্রণব বলেন, আমেরিকায় ভালো লাগার মতো অনেক কিছুই আছে, কিন্তু ভালবাসার দেশ তো নিজের মাতৃভুমি বাংলাদেশ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। আমার আমেরিকা ভ্রমণের উদ্দেশ্য মুলত ছিল আমেরিকার বহু বর্ণিল শিক্ষা ও সংস্কৃতির কাছ থেকে নিবিড় পাঠ নেয়া। বিচিত্র রং, ভাষা আর আচারের আমেরিকা থেকে অভিজ্ঞতা নেয়া। যা নিজের প্রফেশনাল এবং সোস্যাল জীবনে কাজে লাগাতে পারি। ৩ সপ্তাহে ৫ টি স্টেট ঘুরে ঘুরে কেবল আমেরিকার সৌন্দর্য্য দেখিনি, অসংখ্যবার বিস্ময়ে থমকে দাড়িয়ে মিলাতে চেয়েছি বাংলাদেশকে।

প্রণবকান্তি জানান, সবচেয়ে বড়ো বিস্ময় জাগানিয়া ঘটনা ঘটলো সানটাফি ইন্ডিয়ান ল্যাংগুয়েজ স্কুলে। আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শিক্ষাথীরা! দেখেই চোখ ছল ছল করে উঠল। নিজের দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দুরে আমার জন্য লাল সবুজের পতাকা। আবার দিনটি ছিল ২৭ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন। স্কুলের শিক্ষাথী, শিক্ষকদের আমাদের স্বাধীনতার গল্প বলার পর দেখি সকলেরই চোখ ছলছল। বুঝি, কি বিয়োগ, বেদনা, মায়া আর আবেগভরা আমাদের স্বাধীনতার গল্প!

তিনি বলেন, নিজের চোখে দেখা আর টেলিভিশনে দেখা এক নয়। জীবনকে জানার যতোগুলো উপায় আছে, তার মধ্যে ভ্রমন অন্যতম। নেড়ে চেড়ে দেখলে জীবন সুঘ্রাণই ছড়ায়। আর মানুষের সংস্পর্শ বইয়ের পাঠ দেয় অন্য জীবন।
জ্ঞানের রাজ্যে ভ্রমণের জন্য তো কোনো পাসর্পোট ভিসা লাগেনা। আমাদেরকে সেই জ্ঞানের জগতকে উপভোগ করতে হবে। বিনিময়ে জ্ঞান কখনো কমেনা।
শিক্ষার উদ্দেশ্য তো সবকিছুকে এক চোখে দেখা নয়, বরং প্রত্যেকটি বিষয়কে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে দেখা, বৈচিত্রকে উপভোগ করা।

আমেরিকার শিক্ষকদের স্বাধীনতা, পড়াশুনার বৈচিত্রতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সেখান থেকে অনেক কিছু আমরা গ্রহণ করতে পারি। তাছাড়া, ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর ইতিহাস ও সংস্কৃতি সংরক্ষনে আমেরিকান সরকারের যে আন্তরিকতা তা আসলেই প্রশংসার দাবী রাখে।
‘গল্প-কথায় অভিজ্ঞতা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনোভেটরের মূখ্য সঞ্চালক ও সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ এবং পরিচালনা করে স্বজন সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম অনি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সভাপতি প্রভাষক সুমন রায়।

অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পর প্রণবকান্তি দেবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক আল আজাদ, দৈনিক যুগান্তর সিলেট ব্যুরো ইনচার্জ সংগ্রাম সিংহ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা)’র সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দেবু, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে জাদু, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, লেখক-সংগঠক ধ্রæব গৌতম, হাওর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কাশমীর রেজা, যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সাবেক সভাপতি মেহেদী কাবুল, ইনোভেটরের সমন্বয়ক জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন, শাহরিয়ার মোহাম্মদ শাহিন, রেজওয়ানা সামি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূঁথিপাঠক খোকন ফকির, কণ্ঠশিল্পী শামীম আহমদ, ইকবাল সাঁই, প্রেরণা একাত্তরের মবরুর আহমদ সাজু, স্বজন সমাবেশের সুবিনয় আচার্য্য রাজু, শাওন আহমদ, সোহান মিয়া, যীশু আচার্য্য, আলী হোসেন রানা, ইনোভেটরের জুবেদা উর্মি, নাঈমুর রাহি, শেখ মুত্তাকিন দিপু, মো. নিহাম মতিন প্রমুখ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *