ভাতই জোটে না, চিকিৎসা করোং কী দিয়া? : ছালেহা

নিউজ ডেস্ক:: ছালেহার পাশে দাঁড়ানোর মত যারা ছিলেন, তারা সবাই মারা গেছে। আশ্রয় হয়েছে দিনমজুর জামাইয়ের বাড়িতে। শরীরে বহন করছেন বিশাল আকৃতির ঘ্যাগ বা গলগণ্ড। এ জীবনের বোঝা যেন আর বয়ে নেবার সামর্থ নাই। শৈল্য চিকিৎসা করে ঘ্যাগ অপসারণ করাবেন, সে সামর্থও তার নাই।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাতিলাপুর গ্রামের হতদরিদ্র মোক্তার আলীর স্ত্রী ছালেহা বেওয়া। স্বামী ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন। তিনিও মারা গেছেন ১০ বছর আগে। একমাত্র পুত্র আমিনুর রহমান দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। দুই বছর পর সে ছেলেও মারা যান। বৃদ্ধ বয়সে ছালেহার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। কোথায় যাবেন, কী খাবেন?

এ অবস্থায় ঠাঁই হয় হত দরিদ্র মেয়ে মোর্শেদা বেগম ও দিনমজুর জামাইয়ের সংসারে। তাদেরও অভাবি সংসারের টানাপড়েন। বাধ্য হয়ে ছালেহাকে নামতে হয় ভিক্ষাবৃত্তিতে।

ছালেহা জানান, এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কার্ড। তার ভাষায় ‘তিন-চাইর হাজার ট্যাকাও দিবের পাং নাই কাডো পাং নাই। ভাতই জোটে না চিকিৎসা করোং কী দিয়া’।

এভাবেই চলছে ছালেহার জীবন সংগ্রাম। ছালেহার বেঁচে থাকার প্রশ্নে অনেক কিছুরই জবাব নাই।

এ বিষয়ে থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, ‘আমি ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে বলেছিলাম ভাতা দেয়ার জন্য, দিয়েছে কি না জানি না।’

ছালেহার চিকিৎসা কি হবে না? কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন এসএম আমিনুল ইসলাম দিলেন আশ্বাস। বলেন, ‘অপারেশনের উদ্যোগ নেব আমরা।’

সিভিল সার্জন উদ্যোগ নিলে ছালেহার চিকিৎসা হবে নিশ্চয়। কিন্তু তার সামাজিক নিরাপত্তা কার্ড পাওয়ার যে অধিকার সেটার কী হবে? তিনি বিধবা ভাতা এবং বয়স্ক ভাতা-দুটো পাওয়ারই যোগ্য। হতদরিদ্রদের ঘর করে দেয়ার সরকারি ঘোষণাতেও তার নাম আসতে পারে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *