মানসম্মত ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা সেবা দিতে কাজ করছে লায়ন্স শিশু হাসপাতাল

সবার সাধ্যের মধ্যে মানসম্মত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য লায়ন্স শিশু হাসপাতাল সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। হাসপাতালে সমাজের অবহেলিত শিশুদের স্বল্প খরচে চিকিৎসাও প্রদান করা হচ্ছে। এই হাসপাতালের পরিধি যত বাড়ুক কিংবা যতই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠুক না কেন, কোন অবস্থাতেই হাসপাতালটি বাণিজ্যিক হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে না। দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবেই হাসপাতালের পরিচিতি যেন চিরদিন থাকে সে ব্যাপারে স্থায়ী সিদ্ধান্তও হওয়া দরকার।
লায়ন্স শিশু হাসপাতালের বার্ষিক সাধারণ সভায় বর্তমান চেয়ারম্যানের বক্তব্যে এ তথ্য জানানো হয়। হাসপাতালের ২০১৬-১৭ বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নগরীর একটি অভিজাত হোটেলের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। লায়ন ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার-এর সভাপতিত্বে বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ক্লাবের জেলা ৩১৫ বি-১ এর সাবেক জেলা গভর্নর ডা. আজিজুর রহমান, হাসপাতালের ডাইরেক্টর লায়ন ডা. শামছুর রহমান, লায়ন্স ক্লাব অব সিলেটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লায়ন মুহিবুর রহমান।

লায়ন্স শিশু হাসপাতালের সেক্রেটারি লায়ন ইমরান আহমদের পরিচালনায় লায়ন মুহিতুর রহমানের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন লায়ন্স শিশু হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী লায়ন মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। পরে বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বক্তব্য পাঠ করেন ২০১৭-১৯ বছরের চেয়ারম্যান লায়ন জহির বক্ত। এছাড়া ট্রেজারার রিপোর্ট পেশ করেন লায়ন জোবায়ের আহমদ চৌধুরী (এম.জে.এফ) এবং সেক্রেটারি রিপোর্ট পেশ করেন লায়ন ডা. সোলাইমান আহমদ। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে হাসপাতালের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন লায়ন্স ক্লাব অব সিলেটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার শাহজাহান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মানব সেবা হচ্ছে একটা মহৎ কাজ এর চেয়ে আর বড় কোন কাজ হতে পারেনা। এটাই প্রকৃত সুখ। শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যত। এই আগামী প্রজন্মের শিশুদের সুষ্ট সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে লায়ন শিশু হাসপাতাল একটি মডেল হাসপাতাল হিসেবে কাজ করবে। এর উন্নয়নে এই হাসপাতালের সাথে জড়িত সকলের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবো।’

সাধারণ সম্পাদকের ২০১৬-১৭ সনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১১ সাল থেকে আধুনিক ও সম্প্রসারিত হয়ে নতুন রূপে এই হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। যার ফলে রোগীর সেবা বর্ধিত কলেবরে প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৬-১৭ সনে হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়েছেন ২৯ হাজার ৩৪০ জন। যুগের সাথে চিকিৎসা উপযোগী ও রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা ও আধুনিক চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা থাকলে এই হাসপাতালটি হতে পারে শিশুদের জন্য একটি অন্যতম হাসপাতাল ও সিলেটের একমাত্র শিশুস্বাস্থ্যের অবলম্বন’।

কোষাধক্ষের প্রতিবেদনে ট্রেজারার লায়ন জুবায়ের আহমদ চৌধুরী ২০১৬ সালের ১ জুলাই হতে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন। এতে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ বছরে হাসপাতালের সর্বমোট আয় ৬৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৪৫টাকা এবং ব্যয় ৫৯ লাখ ১৮ হাজার ৩৮৮ টাকা। ব্যাংক জমা ও নগদ স্থিতিসহ সবমিলিয়ে বর্তমানে জমা আছে ৯০ লাখ ৩ হাজার ১৫৭ টাকা।’

বার্ষিক সাধারণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- লায়ন্স ক্লাব অব সিলেটের সেক্রেটারি লায়ন ডা. সোলাইমান আহমেদ, লায়ন হুমায়ুন কবির, লায়ন আব্দুল্লাহ আল মামুন, লায়ন আব্দুস সাত্তার সোয়েব, লায়ন গৌতম লাল দত্ত, লায়ন শামসুল আলম খান সাজু, লায়ন খায়রুননেছা, লায়ন আছিয়া খানম শিকদার, লায়ন ডা. তহুর আব্দুল্লাহ চৌধুরী, লায়ন ডা. শামিমুর রহমান, লায়ন মাহবুবুল হক, ফজলুল বাসিত বেলাল, মিসবাহুল ইসলাম কয়েস, লায়ন আবু তালেব মুরাদ, লায়ন আফতাব আহমেদ, লায়ন মোহাম্মদ নওশেদ আলী সবুজ। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দসহ দাতা সদস্য, আজীবন সদস্য, লায়নবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পেশ ও অনুমোদন, সেক্রেটারী কর্তৃক বিগত বছরের প্রতিবেদন পেশ, কোষাধ্যক্ষ র্কর্তৃক বিগত বছরের অডিট রিপোর্ট পেশ এবং অডিটর নিয়োগ, জীবন সদস্যদের সনদ প্রদান, সম্মানিত সদস্যবৃন্দের বক্তব্য এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন, সভাপতির ভাষণ ও আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *