শেষ হওয়ার পূর্বেই বাঁধের মাটি ধসে পড়ছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:: জগন্নাথপুর বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধের মাটি ধসে পড়ছে। গত তিনদিনের বৃষ্টিতে ওই বাঁধের দুই”তিনটি স্থানে মাটি নিচের দিকে ধসে পড়ছে। এমন দৃশ্য গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের পোল্ডার-১ এর মইয়ার হাওরস্থ ১০৮ নম্বর প্রকল্পের বড়ডহর এলাকায় দেখা গেছে। ফলে কৃষকরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, ধানের সবুজ চারায় সোনালী আভা দেখা দিয়েছে। আর কদিন পরই সবুজে সোনালী ধানের শীষ দুলবে। মইয়ার হাওরস্থ ১০৮ নলুয়া হাওরের পোল্ডার-১ এর ১০৮ নম্বর বেড়িবাঁধের দুই”তিন স্থানের মাটি বাঁধ থেকে ধসে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে সংস্কারের কাজ চলছে। তবে প্রকল্পের পাশে সাইনবোর্ড থাকার নির্দেশনা থাকলেও সরেজমিনে তা দেখা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ১ এপ্রিল অতিবৃষ্টিতে নলুয়ার হাওরের বৈশারভাঙ্গা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রথমে হাওরে পানি প্রবেশ করে ফসল তলিয়ে যায়। পরে অকাল বন্যায় একে একে প্রায় সবকটি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হাওর তলিয়ে গেলে কৃষকরা ধান তুলতে পারেননি। এবারো শুরু হয়েছে বৃষ্টি। গত তিন দিনের বৃষ্টিপাতে ফসলের কোন ক্ষতি না হলেও ফসলরক্ষা বাঁধে কিছু কিছু ক্রটি দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া জানান, পরপর দুই বছর ধরে ফসল হারিয়ে আমরা খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। অনেক কষ্টে এবার এক হাল ছয় কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছি। কিন্তুু গত বছরের মতো এবারো টানা বৃষ্টিপাত দেখা দেয়ায় ফসল ঘরে তুলতে পারব কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

বেরী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, গত তিন দিনের টানা বৃষ্টি আমাদের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। এভাবে টানা বৃষ্টিপাত হলে ফসল তোলা দুরুহ হয়ে পড়বে।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, একদিকে কৃষকরা অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির আশংকায় চিন্তিত অপরদিকে কিছু কিছু ফসলরক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেয়ায় কৃষকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ১০৮নং প্রকল্প কমিটির সভাপতি আরশ মিয়া বলেন,টানাবৃষ্টিতে বাঁধের যেসব অংশের মাটি ধসেছে সেইসব অংশে পুনরায় মাটি ফেলার কাজ চলছে। তিনি বলেন, বাঁধের কাজ সঠিকভাবে শেষ করতে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাসির উদ্দীন বলেন,টানাবৃষ্টিতে কিছু কিছু বাঁধে সামান্য ত্রুটি দেখা দিলেও সেগুলো দ্রুত সংষ্কারে তৎপর রয়েছেন প্রকল্পের সভাপতিরা। তিনি ১০৮নং প্রকল্পের সভাপতি আরশ আলীর বাঁধ ত্রুটিমুক্ত করতে কাজ চলছে বলে জানান।

জগন্নাথপুরের ইউএনও মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে আর কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হবে। তিনি বলেন, বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে এবার হাওর তলিয়ে যাবে না।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *