বাবার স্মৃতিচারণে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:: বৃহষ্পতিবার স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশের যোগ্যতা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য রাখতে গেলে সৃষ্টি হয় আবেগঘন মুহূর্ত।

বক্তব্যে দেশের অগ্রযাত্রায়, দেশের মানুষের কল্যাণে জাতির জনকের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। তার এই আবেগ তখন সংক্রমিত হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার মধ্যে।

মঞ্চে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি বৈরী পরিবেশে দেশে এসেছিলাম। সেখান থেকে জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে যাত্রা শুরু করি। এরপর বাংলাদেশকে একটি ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। এই অগ্রযাত্রার সূচনা করেছিলেন জাতির পিতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে গড়ে তোলার কাজ সফলভাবে করে যাচ্ছিলেন তিনি। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন, এর মধ্যেই বাংলাদেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়ে গেছেন। আজ আমরা সেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষের এই যে অর্জন, উনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) দেখে যেতে পারেননি। তার স্বপ্ন ছিল, বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটবে, বাংলার মানুষ উন্নত জীবন পাবে। আজকের এই অর্জন সেই সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে, তার স্বপ্ন নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করে যেতে পারলে হয়তো আরও আগেই আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে পারতাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশের এই স্বীকৃতি, এই মর্যাদায় নিশ্চয় জাতির জনকের আত্মা শান্তি পাবে। এই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কত শত মানুষের অবদান, আত্মত্যাগ রয়েছে। আজ তাদের আত্মা নিশ্চয় শান্তি পাবে। আমি কেবল সবাইকে বলতে চাই, আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে হবে। আমরা যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। আমরা কেন পিছিয়ে থাকব? আমরা কেন পরব না নিজের পায়ে দাঁড়াতে? আজ প্রমাণ হয়েছে, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা গর্বিত জাতি হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই। আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই। সবার কাছে আমার আবেদন থাকবে— আমাদের এই অগ্রযাত্রা যেন কখনও থেমে না যায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন, সেই স্বপ্ন যেন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর একে একে ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধিত করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে জাতিসংঘ ও ইউএনডিপির প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নেতা, ঢাকাস্থ বিদেশি মিশনের প্রতিনিধিসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *