জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গতকাল ১৭ মার্চ শনিবার সিলেটের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল দক্ষিণ সুরমার রাগীব নগরস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, পৌনে ১০টায় জন্ম দিবসের কেক কাটা এবং সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের গ্যালারী-১ এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দানবীর ড. রাগীব আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে বিশ্বের কাছে সম্মানি জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায় সে লক্ষ্যেই আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলি দেশ ও জাতির স্বার্থে কারাগারে কাটিয়েছেন।রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়েছিলেন বলেই আজ আমি ও আমরা স্বাধীন বাংলা দেশে বিভিন্নভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে তার নীতিকে অনুসরণ অনুকরণ করে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হবে। আর এ দায়িত্ব নিতে হবে যুব সমাজকে।
তিনি আরো বলেন, যে সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্ধকারকে দূর করতে প্রধান অস্ত্র হিসেবে শিক্ষাকে বেছে নিয়েছেন। বর্তমান সরকারের গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে দানবীর ড. রাগীব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আজ বাংলাদেশের যে উন্নয়ন হচ্ছে তার পেছনে সবচেয়ে বড় প্রেরণা ও শক্তি হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শ ও দেশ প্রেমিক সাহসী চেতনা। তিনি বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে সঠিক নেতৃত্ব¡ গড়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, মানবসম্পদ গড়ে তুলতে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন দরকার, আর এসবের জন্য বঙ্গবন্ধুই গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন বর্তমান সরকারের আমলে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে এবং যাবে। তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন যোগ্য নাগরিক হিসাবে নিজেকে গড়ে তুললে অনেকেই আগামীতে দেশ পরিচালনায় আসবে। লিডিং ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে এটাই আমার স্বপ্ন। আর এই স্বপ্ন পূরণে শিক্ষার্থীরা আন্তরিক প্রচেষ্ঠা চালাবে এই প্রত্যাশা আমার।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ কামরুজ্জামান চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিবসে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন,জাতির পিতার জীবন ও আদর্শ আমাদের জাতীয় জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম নিজেদেরকে দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। ভারতবর্ষের বিভাজনের পর থেকে তৎকালীন পাকিস্থান সরকার আমাদেরকে ভাষা ও অর্থনৈতিকভাবে যে বৈষম্য দেখিয়েছে এবং বঞ্চিত করেছে তার মুক্তির জন্যই ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। তিনি আরও বলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিনত হবে। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শণ জানার জন্য তাঁর লিখিত বইগুলো পড়ার আহবান জানান, যাতে তরুণ সমাজ বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শকে ধারণ করে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারবে। আজ জাতীয় শিশু দিবস, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমত্ব ছিল অসাধারণ। তিনি শিশুদের প্রতি সবাইকে দায়িত্ববান হওয়া আহবান জানিয়ে তাদেরকে সমাজে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
লিডিং ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এ্যডমিশন) মো. কাওসার হাওলাদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক যেমন রাজনৈতিক সংগ্রাম, দেশ পরিচালনা, কারাগারের সময়কাল এবং আর্তমানবতার সংগ্রামসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. নজরুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এস. এম. আলী আক্কাস, কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. গাজী আব্দুল্লাহেল বাকী, আধুনিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হাবিবুল আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ও ইংরেজী বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং শিক্ষার্থী ফাহমিদ চৌধূরী। আলোচনা শেষে জন্ম দিবসের কেক কাটা হয় এবং এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।