নিজস্ব প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক এবং সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর পৃথক দু’টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের হালুয়ারগাঁও এলাকায় লেগুনা চাপায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাসহ দুইজন নিহত হন।
তবে নিহতরা হলেন শাল্লা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন (৪৫) ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সেলিম আহমদ (৩৫)। মোতালেব হোসেনের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামে আর সেলিম আহমদ পরিবার নিয়ে শহরের নবীনগরে বসবাস করতেন। দুর্ঘটনায় আমির হোসেন (৩০) নামের আরো এক খামারি আহত হয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের জানিগাঁও এলাকায়।
এদিকে তাহিরপুরের পণতীর্থে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিউটি রানী চক্রবর্তী (৪৫) নামে এক তীর্থযাত্রী নিহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের জানিগাঁও এলাকায় একটি মুরগির খামার পরিদর্শন শেষে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনসহ তিন জন মোটরসাইকেলযোগে সুনামগঞ্জ শহরে ফিরছিলেন। সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের হালুয়ারগাঁও এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা সুনামগঞ্জ শহর থেকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জগামী একটি লেগুনা মুখোমুখি হয়ে তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সেলিম আহমদের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত মোতালেব হোসেনকে স্থানীয় লোকজন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তিনিও মারা যান।
দুর্ঘটনার পর সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে এবং নিহত সেলিমের লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। দুই জনের লাশ সদর হাসপাতালে নেয়ার পর শহরের ষোলঘরস্থ জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুটে যান। নিহতদের আত্মীয়-স্বজন খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন। এসময় তাদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, মোতালেব হোসেন শাল্লা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ছিলেন। পাশাপাশি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাড়তি দায়িত্ব পালন করতেন। দুই জনের লাশ সদর হাসপাতালে রাখা আছে। আজ (শুক্রবার) ময়নাতদন্ত শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক একেএম জালাল জানান, আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট পাঠানো হয়েছে। নিহত দুই জনের লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘাতক লেগুনা দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যায়।
এদিকে তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীতে পণতীর্থ গঙ্গাস্নানে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিউটি রানী চক্রবর্তী (৪৫) নামে আরেক জনের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বিউটি রানী চক্রবর্তী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের রেন্টু ভূষণ চক্রবর্তীর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের লালপুর এলাকায় দুটি যাত্রীবাহী দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা তীর্থযাত্রী বিউটি রানী চক্রবর্তী গুরুতর আহত হন। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় অরবিন্দু চক্রবর্তী নামের আরো একজন আহত হন।