খেলাধুলা ডেস্ক:: টান টান উত্তেজনাকর ম্যাচে স্মরণীয় জয় পেল বাংলাদেশের। এই জয়ে নতুন ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টি-টোয়েন্টির সীমিত ওভারে এই প্রথম দুইশোর বেশি রান করল টাইগাররা।শুধু রান করাই নয়!জয়ও ছিনিয়ে নিল মুশফিকরা।
শ্রীলংকার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে কুশল পেরেরা (৭৪) এবং কুশল মেন্ডিসের (৫৭) জোড়া ফিফটিতে ২১৪/৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে শ্রীলংকা। লংকানদেরকরা ২১৪ রানের জবাবে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে দাপটের সঙ্গে ফিরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীনবাহিনী।
শেষ দিকে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৮ বলে১৬ রান। এমন অবস্থায় ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের পথ সহজ করেন মুশফিকুর রহিম। মূলত তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে বাংলাদেশ দল।
শ্রীলংকার করা ২১৪ রানের জবাব দিতে নেমে উইকেটেঝড় তুলেন লিটন কুমার ও তামিম ইকবাল। ৫.৫ ওভারে ৭৪ রান তুলতেই বিপদে পড়ে যান লিটন। নুয়ান প্রদীপেরবলে বিভ্রান্ত হওয়ার আগে ১৯ বলে ২ চার এবং দৃষ্টিনন্দন৫টি ছক্কার সাহায্যে৪৩ রান করেন লিটন কুমার।লিটনের বিদায়ের ধাক্কা সামলিয়ে ওঠার আগেই বিদায় নেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালও। থিসেরা পেরেরার বলটি তামিমের ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠলে তা লুফেনেন পেরেরা। ৯.২ ওভারে ১০০ রানে দুই ওপেনারেরউইকেট হারিয়ে কিছুটা থমকে যায় বাংলাদেশ দল।সাজঘরে ফেরার আগে ২৯ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৪৭রান করেন তামিম ইকবাল।
তামিম ইকবালের বিদায়ের পর তৃতীয়উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার। নুয়ান প্রদীপেরদ্বিতীয় শিকারে পরিনত হওয়ার আগে ২২ বলে ২৪ রান করে যান টপঅর্ডার এ ব্যাটসম্যান।সৌম্যর বিদায়ের পর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন মুশফিক।
শেষ দিকে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪ বলে ২২ রান। এমন অবস্থায় বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মেন্ডিসের ক্যাচে পরিনত হনরিয়াদ।৪২ রানে থেমে যায় তাদের এইজুটি।সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ২০রান করেন রিয়াদ।
দলের কঠিন মুহুর্তেমুশফিককে সঙ্গ দিতে পারেননি সাব্বির রহমান রুম্মন। রানের খাতা খোলার আগেই রান আউটের ফাঁদে পড়েন সাব্বির। শেষ পর্যন্ত মুশফিকুর রহিমের একার লড়াইয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল। ৩৫বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭২ রানের লড়াকু এক ইনিংস খেলে দলকে স্মরণীয় এক জয় উপহার দেন ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
শনিবারটসে জিতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বৃষ্টির কারণে একটু দেরিতে খেলা শুরু হয়। ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে শ্রীলংকা। গুনাথিলাকাকে সঙ্গে নিয়ে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন কুলশ মেন্ডিস। প্রথম ৪ ওভারে ৫২ রান তুলেন তারা।
উদ্বোধনী জুটিতে কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ৪.৩ ওভারে ৫৬ রান তুলেন গুনাথিলাকা। তাদের এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টারের বলে স্টাম্প উড়ে যায় ধানুস্কা গুনাথিলাকার। সাজঘরে ফেরার আগে ১৯ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান করেন লংকান এই ওপেনার।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুশল পেরেরাকে সঙ্গে নিয়ে ফের জুটি বাঁধেন মেন্ডিস। এই জুটিতে তারা ৮৫ রান যোগ করেন। ইনিংসের ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে এসে চার বলে ২ উইকেট শিকার করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কুশল মেন্ডিস এবং দাসুন শানাকে সাজঘরে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে কিছুটা স্বস্তির পরশ এনে দেন ভারপ্রাপ্ত এ অধিনায়ক।
এরপর নতুন ব্যাটসম্যান দিনেশ চান্দিমালের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের শেষ ওভারে মোস্তাফিজকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বল শূন্যে তুলেন কুশল পেরেরা। মুশফিকের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭৪ রান করেন কুশল পেরেরা। রানের খাতা খোলার আগেই থিসেরা পেরেরাকে পেরান কাটার মাস্টার।
শ্রীলংকা: ২০ ওভারে ২১৪/৬ (কুশল পেরেরা ৭৪,মেন্ডি ৫৭, থারাঙ্গা ৩২*, গুনাথিলাকা ২৬; মোস্তাফিজ ৩/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ২/১৫)।
বাংলাদেশ: ১৯.৪ ওভারে ২১৫/৫ রান (মুশফিক ৭২*, তামিম ৪৭, লিটন ৪৩, সৌম্য ২৪, মাহমুদউল্লাহ ২০; নুয়ান প্রদীপ ২/৩৭)।
ফল: বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।