কত দিন পর কথাটা শুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে…

খেলাধুলা ডেস্ক:: প্রেমাদাসার জিমনেশিয়ামের সরু গলিটা ধরে কোথায় যেন হন্তদন্ত হয়ে ছুটছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দেখা হতেই ‘কী খবর?’ বলেই অদৃশ্য হয়ে গেলেন। হাথুরুর কাছে কিছু প্রশ্ন ছিল, সেটা করার আর সুযোগ হলো না।

কাল দলের প্রতিনিধি হয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন রমেশ রত্নায়েকে। তাঁর কথায় থাকল ‘বাংলাদেশকে হালকাভাবে নিচ্ছি না’ ধরনের ক্রিকেটীয় সৌজন্য। কত দিন পর বাংলাদেশকে শুনতে হচ্ছে এসব কথা। অথচ গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে এই ‘সৌজন্য’ দেখিয়েছিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মাটিতেই বাংলাদেশকে টানা তিনটা সিরিজ হারিয়ে এসেছে শ্রীলঙ্কা। এবার নিজেদের দেশের মাঠে মাহমুদউল্লাহদের আরও এলোমেলো করে দেওয়ার সুযোগটা কীভাবে কাজে লাগাতে চায় শ্রীলঙ্কা? রত্নায়েকে অবশ্য বিষয়টা দেখছেন অন্যভাবে, ‘আপনারা এভাবে দেখছেন। আপনারা দেখছেন, তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তবে আমি মনে করি, আমরা সেখানে (বাংলাদেশে) ভালো খেলেছি। হয়তো তারা একটু খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বের সঙ্গে নিই। আমি নিশ্চিত তাদের চাওয়া একই, আমাদের দেখাতে চায় তারা আলাদা। আমরা এটার জন্য ভালোভাবে তৈরি।’

ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসের পারদ ক্রমেই নিম্নমুখী। এ অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তারা? ক্রিকেটীয় সৌজন্য বলে কিছু আছে বলে প্রতিপক্ষের একজন কোচ হিসেবে সরাসরি হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিতে পারেন না রত্নায়েকে। তবে যেটি বললেন, সেটি শুনে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারে বাংলাদেশ, ‘তারা অনেক শক্তিশালী দল। দেশের মাঠে তারা সব দলকেই হারিয়েছে। তারা আমাদের মাঠেই আমাদের হারিয়েছে। এ দলে কিছু খেলোয়াড় আছে, যাদের দুর্দান্ত কিছু করার সামর্থ্য আছে। তবে আমরা তাদের বিপক্ষে খেলতে তৈরি।’

কুমার সাঙ্গাকারা-মাহেলা জয়াবর্ধনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে কিছুদিন কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। কিন্তু হাথুরুর ছোঁয়ায় কীভাবে যেন সেই শ্রীলঙ্কাই বদলে গেছে। হাথুরুর কাছে কি জাদু আছে? শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচ রত্নায়েকে বললেন আসল কথাটা, ‘সব সময়ই বলে এসেছি, আমাদের দলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। দরকার শুধু ভাবনায় পরিবর্তন। হাথুরু এসে সেটাই করেছে। তাদের ভাবনাটা বদলে দিয়েছে সে। খেলোয়াড়দের স্মার্ট অপশন বেছে নিতে উৎসাহিত করে সে। যদি ব্যর্থও হয় কেউ, তবুও বলে, “যথেষ্ট ভালো ছিল। পরে আবারও চেষ্টা কোরো।” ধরুন, আপনি একটা ছেলেকে বলছেন শট খেলতে। যদি সে আউট হয়ে যায়, আপনি প্রশ্ন করতে পারেন না, “তুমি কেন এই শট খেলেছ?” সে এক কথার মানুষ। আমরা খেলোয়াড়দের এই আত্মবিশ্বাসটা দিয়েছি।’

বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ঘাটতিটা বোধ হয় এখানেই—আত্মবিশ্বাসের অভাব!

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *