যা করেছি ঠিকই করেছি, বলছেন সেই মডেল-মা

বিনোদন ডেস্ক:: সমালোচনা হয়েছে। হয়েছে মামলাও। তবে দমে যাননি জিলু জোসেফ। তিনি মনে করেন, যা করেছেন, ঠিকই করেছেন আর সেই কাজের জন্য তিনি গর্বিত।

একটি মালয়ালি পাক্ষিক প্রত্রিকার প্রচ্ছদের ছবিতে কেরলের অভিনেত্রী-মডেল জিলুকে দেখা গিয়েছে শিশুকে স্তন্যপান করাতে। পত্রিকার দাবি, মহিলাদের প্রকাশ্যে স্তন্যপান করানোর স্বাধীনতার জন্যই এমন উদ্যোগ। তবে সেই ছবি প্রকাশের পর মহিলাদের অশোভন ভাবে দেখানোর অভিযোগে মামলা হয়েছে। স্তন্যপান করানোর ভান করার অভিযোগও দায়ের হয়েছে শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে শিশুর ছবি ব্যবহার নিয়ে।

জিলুর পাল্টা প্রশ্ন, “যখন শিশুদের সাবান, তেল, শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা হয়, তখন তো এত প্রশ্ন ওঠে না! এখানে ছবির মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে। যাতায়াতের পথে অনেক সময় দেখেছি, বাচ্চা কাঁদছে খিদেয়। কিন্তু মা ভিড়ের মধ্যে বসে আছেন বলে বাচ্চাকে স্তন্যপান করাচ্ছেন না। আমি নিজে মা না হয়েও এমন ক্যাম্পেনের অংশীদার হয়ে গর্বিত।”

ইউনিসেফ ইন্ডিয়ার ট্যুইটার হ্যান্ডল থেকে ওই ছবি শেয়ার করে স্তন্যপানে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। অনেকে পুরুষতান্ত্রিক সংস্কারের বেড়া ভেঙে মাতৃত্বের এই উদযাপনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। জিলু অবশ্য বলছেন, “এটা পুরুষতন্ত্র বা সংস্কৃতি কোনও কিছুর বিরুদ্ধেই কোনও লড়াই নয়। এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। সেই স্বাভাবিকতা রক্ষার বার্তাই দেওয়া হয়েছে।”

তবে স্তন্যপানের মতো ‘স্বাভাবিক’ ঘটনা নিয়ে ফোটোশ্যুটকেই তো অনেকে গিমিক বলেছেন। আঁচলে না ঢেকে শিশুটিকে স্তন্যপান করানোর ছবি দেওয়ায় শালীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। জিলুর বক্তব্য, “ছবিতে যেভাবে শিশুটি আমার কাছে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে, তা ভালবাসার প্রতীক। অশালীনতা আসলে থাকে দৃষ্টিতে। কেউ অশালীন দৃষ্টিতে কিছু দেখলে সমস্ত কিছুর মধ্যেই অশালীনতা খুঁজে পেতে পারেন।” তাই তাঁর মতে, বদল দরকার দৃষ্টির, ভাবনার। বদল দরকার শরীর নিয়ে সংস্কারেরও। জিলুর কথায়, “এই কারণে শারীরিক নির্যাতনের পরে যে নির্যাতন করল, তার থেকে বেশি লজ্জিত হতে হয় নির্যাতিতাকেই।”

তবে জিলুর বদলে কোনও মায়ের নিজের সন্তানকে নিয়ে ছবি থাকলে কি অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হত না? পত্রিকার সম্পাদক মন্সি জোসেফ জানাচ্ছেন, তাঁরা অনেক মা’কে ছবি তোলার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কেউ রাজি হননি।

জিলু সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যান। এই ফোটোশ্যুটের জন্য পারিশ্রমিকও নেননি তিনি। বললেন, “ছবি প্রকাশের পর অনেক মা আমায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তবে কোনও মা আমার কোনও ভুল ধরিয়ে দিতে চাইলে তাঁকেও স্বাগত।”

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *