নিউজ ডেক্স:: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের শাহ আরেফিন টিলায় পাথর উত্তোলনের সময় আবারও পাথর শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই বিষয়টি ধামাচাপার দেয়ার চেষ্টা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহ আরেফিন টিলায় বশর মিয়ার পাথরের গর্তে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পাথর চাপায় ৩ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ডিকদারা গ্রামের নজির আলির পুত্র কাচা মিয়া (৩০), জাহির মিয়া ও আফাজ মিয়া। এ ঘটনায় আহত হন ডিকদারা গ্রামের সুক্কুর আলির আব্দুল গনি (৫৫) নামে আরও এক শ্রমিক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর বিষয়টি পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবগত না করেই লাশ গুমের চেষ্টা করে পাথরখেকোরা। এ ব্যাপারে গর্তের মালিক বশর মিয়া জানান, শাহ আরেফিন টিলায় শ্রমিক নিহতের খবর আমার জানা নেই।
শাহ আরফিন টিলা পাথর কোয়ারিতে টাস্কফোর্সের অভিযান চলাকালেই বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ গর্ত ধ্বসের ঘটনা ঘটে। এসময় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান কাছা মিয়া। নিখোঁজ ছিলেন জাহির ও আফাজ।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, গতরাত সাড়ে ১২ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় দুর্ঘটনা কবলিত গর্তের মাটি সরিয়ে জাহির ও আফাজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী র্কমকর্তা জানান, শাহ আরেফিন টিলায় বাজার এলাকায় শ্রমিক নিহত হয়েছে। গর্ত মালিকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। মটিয়া টিলায় আমরা অভিযান করেছি এবং সকল টিলায় মাইকিং করে শ্রমিকদের কাজ না করার জন্য বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রয়ারী কালাইরাগে ৫ শ্রমিক নিহত হয়। শুধু শাহ আরেফিন টিয়া এ বছর প্রায় ৮ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লাশ গুম করার আগেই পুলিশ রাস্তা থেকে উদ্ধার করে। আর মামলা হলেও ধরা ছোয়ার বাইরেও রয়েছেন মূল হোতারা। শ্রমিক সরদারকে গ্রেফতার করেও থেমে যায় গ্রেফতারের মিশন বলে জানায় স্থানীয়রা। তার মধ্যে কয়েকটিতে গর্ত মালিকদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু একটি মামলায় কোন গর্ত মালিকদের গ্রেফতার করা হয়নি।
এদিকে গত বছরের ২৩ শে জানুয়ারি শাহ আরিফিন টিলায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকালে টিলা ধসে ৫ শ্রমিক নিহত হন। পুলিশ নেত্রকোনোর পূর্বধলা ও সদর এলাকা থেকে ৫ শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করেছে। ঘটনার দিনই সিলেটের তৎকালিন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাফায়াতকে দিয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
স্থানীয়রা বার বার দাবি করছেন এভাবে বার বার গর্ত মালিকরা ছাড় পেয়ে গেলে লাশের মিছিল থামানো যাবে না আইনের সঠিক প্রয়োগ দরকার কোম্পানীগঞ্জের প্রতিটি পাথর কোয়ারীতে।