নিউজ ডেস্ক :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা তাদের পাঠ্যক্রমে থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, মাটিতে হাত দিয়ে চারা রোপন করলে বা কাজ করলে লজ্জার কিছু নেই। নিজের হাতে বাগান করলে সেই বাগানে যখন একটা ফল হয় সেটা ছিঁড়ে খেতে আরো বেশি গর্ববোধ হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের আমরা লেখাপড়া শিখাচ্ছি। এখন লেখাপড়া শেখার পর অনেকে আর জমিতে কাজ করতে যেতে চাইছে না। আমি বলব আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে কৃষিকাজে অন্তত আন্তরিক হয় সেজন্য তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কৃষির ব্যবহারিক শিক্ষাটা যেন থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য আমি বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
কৃষি আমাদের জীবন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি থেকে ধীরে ধীরে আমরা শিল্পে উন্নীত হব, কিন্তু কৃষিকে বাদ দিয়ে নয়। কারণ, কৃষিইতো আমার কাঁচামালের যোগানটা দেবে। আর আমাদের খাদ্যের যোগান দেবে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ৩২ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ প্রদান করেন। এর মধ্যে ৫টি স্বর্ণ, ৯টি রোপ্য এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক প্রদান করা হয়।
স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্তদের মাঝে পদকের সঙ্গে নগদ এক লাখ টাকা, ৫০ হাজার টাকা এবং ২৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছ রফতানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মৎস অধিদপ্তর স্বর্ণ পদকে ভূষিত করা হয়।
ব্যক্তি পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার স্থাপন করে অনুকরণীয় নজীর স্থাপনের মাধ্যমে কৃষিতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আলহাজ মো. মকবুল হোসেন এমপি স্বর্ণ পদক লাভ করেন। প্রতিকূল পরিবেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কৃষি খামার স্থাপনের জন্য নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি ও কৃষি সহায়ক গবেষণার মাধ্যমে ফসলের মানোন্নয়ন ও নতুন জাত উদ্ভাবনে কাঙ্খিত জীন প্রতিস্থাপন পদ্ধতি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরূপ কৃষি গবেষণা ক্যাটাগরিতে প্রফেসর রাখহরি সরকার এবং প্রচলিত কৃষি পণ্যের পাশাপাশি অপ্রচলিত কৃষি পণ্য উৎপাদনের স্বীকৃতি স্বরূপ মো. আমিনুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণ পদক গ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ন সচিব মইনুদ্দিন আব্দুল্লাহ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং পদক বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। পদক বিজয়ের অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন যশোরের ফারহানা ইয়াসমিন।
এখন অনেকেই ছাদের ওপর বাগান করছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রাম-গঞ্জ পর্যায় পর্যন্ত সবাইকে এই কাজে উৎসাহিত করা উচিৎ। প্রত্যেকে অন্তত নিজের ঘরেও যদি বাগান করে বা নিজের যেসব জমি আছে সেখানে বাগান করেন অথবা অব্যবহৃত যেসব জমি পড়ে আছে কো-অপারেটিভের মাধ্যমে সেসব যদি চাষ করা যায় তাহলে আমাদের খাদ্যের অভাবতো হবেই না উপরন্তু আমরা বিশ্বের অনেক দেশের মানুষকে খাদ্য সাহায্য দিতে পারবো, সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করবো।
তিনি বলেন, এই জন্য আমরা চাচ্ছি আমাদের ছেলে-মেয়েরা ছোটবেলা থেকেই যেন এই কাজটা শিখে নেয়। তাদের জানা উচিৎ, শেখা উচিৎ। বাসস