শেষ সেশনে তাদের প্রয়োজন ছিল ১৩২ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। উইকেটে জমে গিয়েছিলেন জাস্টিন গ্রিভস আর কেমার রোচ। দুজন মিলে ততক্ষণে সপ্তম উইকেটে যোগ করে ফেলেছিলেন ১২২ রান। এদিকে নিউজিল্যান্ডের সব রিভিউ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আবার উইকেটও আচরণ করছিল যেন টেস্টের দ্বিতীয় দিনের মতো। যেখানে ব্যাটারদের প্রতি সাহায্যের হাত থাকে উদার, বোলারদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করে পিচ।
এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট ইতিহাসে ৫০০’র বেশি রান তাড়া হওয়াটাই সবচেয়ে সম্ভাব্য ফল ছিল। আর সে নজির দেখতে বসে ছিল ক্রিকেট বিশ্ব, সাক্ষ্য দিচ্ছে ক্রিকইনফোর বল বাই বল কমেন্ট্রিতে দর্শকদের মন্তব্য।
তবে সেখান থেকে কি না, উইন্ডিজ হাঁটল নিরাপদ ড্রয়ের পথে। শেষ সেশনে তুলল মোটে ৫৮ রান। লক্ষ্য থেকে ৭৪ রান দূরে থাকতে শেষ হলো টেস্টটা। অবিশ্বাস্য এক ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারী ক্যারিবীয়রা।
জাস্টিন গ্রিভস তার ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেছেন শেষমেশ। শেষের আগের ওভারে চার মেরে ২০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। ম্যাচ শেষ করেন ২০২ রান নিয়ে। ওদিকে রোচও খেলেছেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস, ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির পর তিনি ম্যাচ শেষ করেছেন নামের পাশে ৫৮ রান নিয়ে।
তবে যত আফসোসের জন্মই দিক, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু ২৩ বছরের পুরোনো এক বিশ্বরেকর্ড ঠিকই ভেঙে দিয়েছে। ৫ দিনের টেস্টে এখন চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের কীর্তি এখন তাদেরই। এই রেকর্ডটা ছিল নিউজিল্যান্ডের। ২০০২ সালের মার্চে ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ৫৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাথান অ্যাস্টলের ১৬৮ বলে ২২২ রানে ভর করে তারা তুলে ফেলেছিল ৪৫১ রান। সেটাই ছিল এতদিন আধুনিক টেস্টের চতুর্থ দিনে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের ইনিংস শেষ করেছে ৪৫৭ রান নিয়ে। তাতেই ভাঙা হয়ে গেছে বিশ্বরেকর্ডটা।
তবে সব ধরনের টেস্ট মিলিয়ে বিশ্বরেকর্ডটা ভাঙা মোটেও সহজ কাজ নয়। ‘টাইমলেস’ টেস্টের যুগে এই রেকর্ডটা গড়েছিল ইংল্যান্ড। ৬৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ১৯৩৯ সালের মার্চে ইংলিশরা ৫ উইকেট খুইয়ে ৬৫৪ রান তুলে ফেলেছিল। অষ্টম দিনে গড়ানো সেই টেস্টটা শেষ করতে হয়েছিল ইংলিশদের জাহাজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে, সে কারণে ‘টাইমলেস’ হলেও টেস্টটা শেষ করতে হয় ড্র মেনে নিয়ে।
সেই রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেন, আধুনিক ক্রিকেটের এই যুগে কারো পক্ষেই বোধ হয় ভাঙা সম্ভব নয়। যা ভাঙা সম্ভব ছিল, সেটাই আজ ভেঙে দিয়েছে ক্যারিবীয়রা।


