ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে টিকা দেওয়ার পরামর্শ

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবিলায় মশা নিধনের পাশাপাশি ডেঙ্গুর টিকা প্রয়োগে নীতিনির্ধারকদের মনোনিবেশের তাগিদ দিয়েছেন ভাইরোলজিস্টরা।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তাগিদ দেওয়া হয়।

ভাইরোলজিস্টরা জানিয়েছেন, বিশ্বে বর্তমানে ডেঙ্গুর দুটি ভ্যাকসিন রয়েছে, যেগুলো ইতোমধ্যে ২০টির মতো দেশে অনুমোদন পেয়েছে। এই টিকাগুলোর ডেঙ্গু প্রতিরোধ ক্ষমতা ৮০ শতাংশের বেশি। এসব টিকা প্রয়োগে ৯০ শতাংশ ব্যক্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী। তিনি বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি প্রস্তাবিত দুটি ডেঙ্গু ভ্যাকসিন বিশ্বের ২০টির মতো দেশে অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশে এই টিকাগুলোর প্রয়োগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নীতিনির্ধারকদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

সোসাইটি ফর মেডিকেল ভাইরোলজিস্টের সহ-সভাপতি এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, অতীতের তুলনায় ঘন ঘন নতুন ডেঙ্গু সেরোটাইপের পুনরাবির্ভাব ডেঙ্গু রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার একটি কারণ হতে পারে। এ কারণেই মূলত দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠানটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম করোনা অতিমারির অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের যেকোনো ভাইরাসঘটিত অতিমারি মোকাবিলা করতে একটি জাতীয় ভাইরোলজি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।

সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী জুলফিকার মামুন বলেন, ডেঙ্গুতে জ্বর সাধারণত ৫ থেকে ৬ দিন থাকে এবং এরপর জ্বর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। জ্বর কমে গেলে বা ভালো হয়ে গেলে অনেক মনে করেন, রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু জ্বরে মারাত্মক সমস্যা হওয়ার সময় আসলে এটাই। এ সময় রক্তে প্লাটিলেট সংখ্যা কমে যায় এবং রক্তক্ষরণসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। জ্বর কমে যাওয়ার পরবর্তী কিছুদিনকে তাই বলা হয় ‘ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড’। এ সময়টিতে সবার সচেতন থাকা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ সময় রক্তের সিবিসি এবং প্লাটিলেট পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ২০০০ সালে ডেঙ্গু জ্বর ঢাকায় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু আকস্মিক মৃত্যু সাধারণ জনগণের মনে আতঙ্ক ছড়ায়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *