নিউজ ডেস্ক:: রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ। তারা একে প্রহসনের নির্বাচন বলে অভিযোগ করে তিন সিটি কর্পোারেশনে পুনরায় নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান। এর পাশাপাশি বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে তিন সিটির নির্বাচন নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদনও তুলে ধরেন।
সোমবার জোটের এক সভায় এসব দাবি জানানো হয়। সভায় তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, গুলিবর্ষণ, নিপীড়ন, মেয়রপ্রার্থীর ওপর বর্বরোচিত হামলিং এলা, পোজেন্টদের বের করে দেয়া, হুমকি প্রদানসহ যাবতীয় অপতৎপরতার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নেয়ার ঘটনার অভিযোগ করেন নেতৃবৃন্দ। তারা এ ধরনের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সরকারি প্রার্থী-পুলিশ-নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন যৌথ তৎপরতার মধ্য দিয়ে সর্বশেষ এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকেও তামাশায় পরিণত করেছে। নেতৃবৃন্দ-প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে তিন সিটি কর্পোরেশনে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারের তৎপরতা ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ যেভাবে একতরফা দেশ শাসনের বন্দোবস্ত কায়েম করেছে, তারই ধারাবাহিকতা। এই নির্বাচন বুঝিয়ে দিচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও আদৌ কোনো ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য বা গণতান্ত্রিক কায়দায় করার বিন্দুমাত্র কোনো ইচ্ছা এই আওয়ামী লীগ সরকারের নেই।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বরিশালে হাতেনাতে জাল ভোট ধরার সময় বাসদের মেয়রপ্রার্থী মনীষা চক্রবর্তীর ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালানো হয়। বরিশালে সিপিবি’র মেয়র প্রার্থী অ্যাড. আবুল কালাম আজাদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়, কাস্তে মার্কায় ভোট দেয়া ব্যালেট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকার পোলিং এজেন্টরা ছিঁড়ে ফেলে এবং কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের নিগৃহীত করে। রাজশাহীতে গণসংহতির প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদের প্রধান পোলিং এজেন্টের ওপর হামলা ও দুর্ব্যবহার, ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়।
সিলেটে সিপিবি-বাসদ মেয়রপ্রার্থী আবু জাফর একই ধরনের আচরণের সম্মুখীন হন। সব জায়গায় প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া বা কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার মতো ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি ঘটেছে কেন্দ্র দখল করে অবাধে সিল মারা, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন এবং অপেক্ষামাণ ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার মতো ঘটনাও। এসব নিয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন ন্যূনতম কোন ব্যবস্থা নেয়ার আগ্রহ প্রদর্শন করেনি। অর্থ, অস্ত্র ও প্রশাসনের ক্ষমতার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও ছিল ন্যক্কারজনক। তারা বাংলাদেশে নির্বাচনকে, ভোটের অধিকারহরণকে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেয়ার কাজটিতে বৈধতা প্রদান করেছে।