সূত্র জানায়, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এবং সিএসএফ।
মঙ্গলবারও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং বিএনপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সভা থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো-রেড, ইয়েলো ও হোয়াইট জোন। রেড জোনে যারা প্রবেশের সুযোগ পাবেন, তাদের বিশেষ সিকিউরিটি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। ওই কার্ড ছাড়া কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন না। ইয়েলো জোনের জন্য থাকছে আলাদা কার্ড। যারা এই কার্ড পাবেন, তারাই কেবল ইয়েলো জোনে যেতে পারবেন।
রেড ও ইয়েলো জোনের বাইরে যে এলাকা থাকবে, সেটা বিবেচিত হবে হোয়াইট জোন হিসাবে। এই জোনে প্রবেশ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। তারেক রহমানের আগমনের দিন পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার প্রায় ২ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকতে পারে।
সূত্রমতে, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তাকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, আমরা কভার্ট অ্যান্ড ওভার্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছি। পেশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসএসএফ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না তারেক রহমানকে। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা পরিকল্পনায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল হয়ে গুলশান পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা এবং তার বাসভবনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তবে চূড়ান্ত নির্দেশনা এখনো জারি হয়নি।
‘কভার্ট অ্যান্ড ওভার্ট’ নিরপত্তাব্যবস্থার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এটি হলো প্রকাশ্য ও গোপনে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়। প্রকাশ্যে পোশাকধারী এবং গোপনে গোয়েন্দা নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ও তারেক রহমানের বাসভবন দেওয়ালঘেঁষা হওয়ায় দুটি বাসা এবং তারেক রহমানের অফিসকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় আনা হয়েছে। বাসা ও অফিসের মাঝখানের দূরত্ব ও চলাচলের পথকে অতিগুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই পুলিশের বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর রুটজুড়ে প্রতিটি থানা এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
বিশেষ এসকর্টসহ একাধিক চেকপোস্ট থাকবে। সাধারণত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় ৯টি চেকপোস্ট চালু থাকে। যেখানে সার্বক্ষণিকভাবে ১৫০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে তার বাসভবনের আশপাশেও।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক আলম জানিয়েছেন, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনো চূড়ান্ত নির্দেশনা ঠিক হয়নি। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেব।


