লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ বলেছেন, ভ্রমণ সাহিত্য হচ্ছে জৈবনিক উপলব্ধির সারনির্যাস। ভ্রমণ সাহিত্য হৃদয়ের বন্ধ দুয়ার খুলে দেয়। জীবন ও জগৎকে নিবিড়ভাবে পাঠ করতে শিখায়। ভোরের আলো সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ৮ম বই মেলা মঞ্চে ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল রচিত ‘ইউরোপের পথে-প্রান্তরে’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাণ্ডুলিপ্রি প্রকাশন এর স্বত্বাধিকারী লেখক ও প্রকাশক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল-এর সভাপতিত্বে এবং কবি ও সাংবাদিক হেলাল নির্ঝর-এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নেছারুল হক চৌধুরী বুস্তান, ব্যারিস্টার নূরুল হুদা জুনেদ, নজরুল ইসলাম, আখলাকুল আম্বিয়া বাতিন, সাংবাদিক মোঃ ফুল মিয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তরুণ লেখক এস এম ফাহিম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় আরও বলেন, লেখক ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল তাঁর বইয়ে শুধু ভ্রামণিক চোখে লন্ডন, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস এবং স্পেনের তথ্যই তুলে ধরেননি, বরং তিনি এ গ্রন্থে ইতিহাস-ঐতিহ্যের একটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দিয়েছেন। লন্ডন ভ্রমণে তিনি ব্রিটিশদের শাসন, বাঙালি কমিউনিটির অবস্থান, বাঙালি ভাষা-সংস্কৃতি-সাহিত্য-সাংবাদি কতার নানা প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন প্রাজ্ঞতার সাথে। ফ্রান্স ভ্রমণে তিনি মুসলিম শাসনের যোগসূত্রিতা খোঁজে পেয়েছেন, যা তিনি অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বর্ণনা করেছেন। ইতালি ভ্রমণে তিনি রোম সাম্রাজ্য, ইসলামের বিজয় এবং মুসলিমদের অর্ধজাহানকে শাসন-এই প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো গভীর বাস্তবতায় অনুধাবনের নিংড়ানো আবহে তুলে ধরেছেন। তিনি বিশ্বব্যাপী গ্রিক সভ্যতার নগর রাষ্ট্রের প্রভাবে যেমন আশ্চর্য হয়েছেন, তেমনই স্পেনে খোঁজে পেয়েছেন মুসলিম শাসনের অবসানের বিরহগাথা। স্পেনের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে তিনি মুসলিমদের করুণ আর্তনাদকেও ভাষা দিয়েছেন লেখায়। যা নতুন করে মুসলিমদের সোনালি দিনগুলোতে ফিরে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। একজন প্রাজ্ঞ, বিচক্ষণ মুসলিমের জন্য স্পেনের মুসলিম ইতিহাস হতে পারে আলোকবর্তিকা। এভাবেই প্রতিটি দেশের বর্ণনায় তিনি হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার একটি মেসেজ ছড়িয়ে দিয়েছেন গ্রন্থের পরতে পরতে। বক্তারা গ্রন্থটির পাঠকপ্রিয়তা ও বহুল প্রচার কামনা করেন।
কমেন্ট

