ইটভাটা শিল্পকে ধ্বংসের দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলার আহবান

সিলেট আন্দোলন-এর আহবানে উন্নয়নবৈষম্য ও বঞ্চনার চির অবসানে গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন সিলেট বিভাগের সকল জেলার ইটভাটার মালিক, শ্রমিক-কর্মচারীবৃন্দ। রবিবার (২ নভেম্বর) নগরীর মেন্দিবাগস্থ ছালিম ম্যানশনের সামন থেকে মিছিল সহকারে সিলেট সিটি পয়েন্টে এসে গণ-অবস্থান কর্মসূচীতে অংশনে।
সভায় ইটভাটা শিল্পকে নিয়ে প্রশাসনের লাগামহীন নৈরাজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সকল ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানানো হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা প্রশাসনের সকল স্তরে আবেদন নিবেদন করে কোন সারা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে পথে নেমেছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগ ইটপ্রস্তুতকারক মালিক গ্রুপের আহবায়ক হাজী মোঃ দিলওয়ার হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মৌলানা কুতুব উদ্দিন, মোঃ ফয়েজ উাদ্দন আহমদ, মোঃ সামছুল হক, সদস্য সচিব-হাজী আব্দুল আহাদ, অর্থ সচিব মোঃ অহিদ মিয়া, কার্যকরী সদস্য মোঃ আব্দুর রকিব চৌধুরী, মোঃ ফজলু রহমান, সদস্য হাজী মকবুল হোসেন,কন্দর্প বিজয় বনিক (মিহির), কয়েছ আহমদ, মোঃ ফখর উদ্দিন, হাজী মোঃ মহিউদ্দিন, আজাদ মিয়া, আবুল মনসুর, আব্দুল হামিদ, রাসেল আহমদ  সহ সিলেট-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের অধিকাংশ ইট ভাটার মালিক শ্রমিক-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় ড্রাম-সিট দিয়ে তৈরী চিমনি ও  ১২০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন চিমনি বিশিষ্ট অবৈধ ইট ভাটা চালু থাকলেও সিলেট বিভাগে পরিবেশ বান্ধব আধুনিক জিগজ্যাগ পদ্বতির কিলন বিশিষ্ট বৈধ চালু ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা হচ্ছে না বরং অনেক চালু বৈধ ইট ভাটার ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। আমরা বাতিলকৃত ইট ভাটা সহ সিলেট বিভাগের সকল বৈধ পরিবেশ বান্ধব ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন করতে হবে। বিগত হাসিনা সরকারের প্রণীত অনেক কালো আইনই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল অথবা স্থগিত করে সংস্কার সাধন করছেন, তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে অবকাঠামো উন্নয়ন বিরোধী ইট পুড়ানো নিয়ন্ত্রন আইন শিথিল অথবা বাতিল করে দেশের ইট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখাতে উদ্যোগে নিতে হবে। সিলেটের রাস্তাঘাট অবকাঠামো বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। ইট ভাটা বন্ধ হয়ে গেলে সিলেটের রাস্তাঘাট অবকাঠামো উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কোন অবস্থায় ইটভাটা বন্ধ করা যাবে না করার দাবি জানান তারা।
বক্তারা বলেন, সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ পরিচালক সিলেট আসার পর থেকেই ইটভাটার মালিক গনকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করছেন। তিনি ইট ভাটা পরিচালনার জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান না করে বাতিল করে দিচ্ছেন। সিলেট বিভাগে যে সকল ইট ভাটা বাতিল করা হয়েছে সেগুলোর বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করা করতে হবে। সিলেট বিদ্বেষী উক্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও তার সহযোগীকে অনতিবিলম্বে সিলেট হতে অপসারণ করতে হবে। ইটভাটার মালিকগন ব্যাংক হতে কোটি টাকা ঋন গ্রহন করে ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেছন। পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ইট ভাটার মালিকগণ চরম উৎকন্ঠায় রয়েছেন। পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন করা না হলে অধিকাংশ ইট ভাটার মালিকগণ দেউলিয়া হয়ে পড়বেন এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, কর্মচারী, পরিবহন শ্রমিক, নির্ম্মান শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে, যা দেশের সামগ্রীক অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। ইটভাটা ব্যবসায়ীগনের নিকট থেকে সরকার প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ভ্যাট, উৎস কর, বিভিন্ন লাইসেন্স ফি আদায় করে সরকারী কোষাগারে জমা করেছেন। ইট ভাটার মালিকগন দেশের লক্ষ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু সরকার আইনের মারপ্যাছে ইট ভাটার মালিকগনকে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ হয়রানী করে আসছে। আমরা ইট ভাটার মালিকগন এর অবসান চাই।
বক্তারা সমাবেশে ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- সিলেট বিভাগে পরিবেশ বান্ধব আধুনিক জিগজ্যাগ পদ্বতির কিলন বিশিষ্ট বৈধ চালু ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা। পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বাতিলকৃত ইট ভাটা সহ সিলেট বিভাগের সকল চালু বৈধ পরিবেশ বান্ধব ইট ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নের করা। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও তার সহযোগীকে অনতিবিলম্বে সিলেট হতে অপসারণ করা এবং ইট ভাটা নিয়ন্ত্রনে হাসিনা সরকারের প্রণীত সকল কালো আইন বাতিল করার আহবান জানান।
গণঅবস্থান চলাকালে সিলেটের জেলা প্রাশাসক মো. সারওয়ার আলম সিলেটবাসীর প্রতি আশ্বাস প্রদান করে বলেন, সিলেটের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো এবং ইটভাটার মালিক, শ্রমিক-কর্মচারীদের সকল দাবি-দাওয়া আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করবো। বিজ্ঞপ্তি

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *