বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেছে, শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি । শ্রমিকদের ঘামে দেশের অর্থনীতি চলে, উন্নয়নের চাকা ঘোরে। কিন্তু আজ আমাদের শ্রমিক ভাইবোনেরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত, অবহেলিত এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে এই শ্রমিক সমাজ। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক প্রতিদিন শ্রম দিচ্ছেন, অথচ তাদের জন্য নেই নিরাপদ কর্মপরিবেশ, নেই ন্যায্য মজুরি নিশ্চয়তা ও কাজের ক্ষেত্র । শ্রমিকদের পরিবার আজ অনাহার-অর্ধাহারে দিনানিপাত করছে। পরিবেশের দোহাই দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কোয়ারিগুলো, কিন্তু লোটপাট অব্যাহত ছিলো। আমরা চাইনা শ্রমিকদের সন্তান শ্রমিক হউক, কিন্ত তাদের কাজের ক্ষেত্রকে বন্ধ করে দেয়া যাবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচিতে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা, ন্যায্য মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং কর্মসংস্থান নিশ্চয়তার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শ্রমিকদের অধিকার আইনগতভাবে সুরক্ষিত করা হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের বিএনপি বদ্ধ পরিকর। পাশাপাশি প্রচলিত বিধিতে সুষ্ঠ ব্যাবস্থাপনায় কোয়ারিগুলো চালাতে হবে যাতে ইকো সিষ্টেম ঠিক রেখে এখানে কাজের ক্ষেত্র খোলা থাকে।
শুক্রবার বিকেলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ও ধানের শীষের সমর্থনে এবং জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শ্রমিকদের বন্ধ হওয়া কর্মসংস্থান চালুর দাবিতে জাফলং ইউনিয়ন বিএনপি পরিবার, ব্যবসায়ী, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠন সমূহ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড গঠন, শ্রমিকদের বীমা, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ—এ সব হয়েছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি কমিশন কার্যকর করেছিলেন। আর আজ তারেক রহমান শ্রমিক-কৃষক-জনতার শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর ন্যায়সঙ্গত রাষ্ট্র নির্মাণের সংগ্রাম করছেন। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ শুধু খনিজ সম্পদে নয়, অপরূপ প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর। এখানে ইকো-ট্যুরিজম, নদী-ঝরনা নির্ভর পর্যটন শিল্প ও পরিবেশবান্ধব খনিজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব। আমরা এমন উন্নয়ন চাই যা প্রকৃতিকে ধ্বংস নয়, সংরক্ষণ করে মানুষের জীবনমান উন্নত করবে। তাই শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, প্রকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও টেকশই উন্নয়নের জন্য আমাদের সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে হবে।
পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্সের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানার সঞ্চাকনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক সালেহ আহমদ খছরু, সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন, যুগ্ন সম্পাদক এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক কামাল হাসান জুয়েল, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আব্দুল হক, সাধারণ সম্পাদক মদরিস আলী, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন, গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক মিনহাজ শামসী, গোয়াইনঘাট উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জৈন্তাপুর উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ আহমদ, শ্রমিক দল নেতা রমজান মোল্লা, গেয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মিজানুর রহমান হেলাল, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা রহিম উদ্দিন, বৃহত্তর জৈন্তা পাথর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আলী, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল আহমদ প্রমূখ।
সমাবেশে গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন, জাফলং ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বৃহত্তর জৈন্তা পাথর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন, মামার বাজার যুব সমাজ, বল্লাঘাট পাথর উত্তোলন শ্রমিক উউনিয়ন, বালু শ্রমিক ইউনিয়ন, মোটর মেকানিক শ্রমিক ইউনিয়ন, বন্ধন সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ, জাফলং সীমান্ত ঐক্য পরিষদ, জাফলং অটো বাইক শ্রমিক ইউনিয়ন, লাকেরপার যুব সংঘ, মধ্য জাফলং পাথর শ্রমিক ইউনিয়ন, ইছাখাল যুব সংঘ, হোমার শ্রমিক ইউনিয়ন, বেলছা শ্রমিক ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
কমেন্ট

