যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল ও সিরিয়া: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক :  ইসরায়েল ও সিরিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সিরিয়ার সুয়েইদা এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষে ৩২১ জন নিহত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত আসে। খবর আরব নিউজ’র।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তুরস্কস্থ রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতিতে তুরস্ক, জর্ডান ও আশপাশের দেশগুলোও সমর্থন দিয়েছে। তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রিত হয়ে একটি নতুন সিরীয় পরিচয় গঠনের আহ্বান জানান।

ইসরায়েল সুয়েইদা অঞ্চলের দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষার কথা বলেছে। তারা সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরকারি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানায় এবং কয়েক দফা বিমান হামলাও চালায়। এ সপ্তাহেই দামেস্কেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

শুক্রবার ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানান, ৪৮ ঘণ্টার জন্য সিরীয় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীকে সুয়েইদা জেলায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এর আগে সিরীয় বাহিনীকে ইসরায়েলি হামলার মুখে পড়তে হয়।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা সংঘর্ষ থামাতে দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ বাহিনী পাঠাবে। নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও চলবে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সুয়েইদা২৪ প্রধান রিয়ান মারুফ জানিয়েছেন, সেখানকার উত্তর ও পশ্চিমে এখনও সংঘর্ষ চলছে। বিদ্যুৎ, পানি ও খাদ্যের তীব্র সংকটে রয়েছে বাসিন্দারা। শহরের বেশিরভাগ এলাকায় ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন।

সুয়েইদার বাসিন্দা মুদার জানান, চার দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পানি নেই, কিছুই নেই। তিনি বলেন, সংঘর্ষ থেমে নেই। খবরও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (OHCHR)। সংস্থাটি জানিয়েছে, একদিনেই অন্তত ১৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি পরিবারের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়। এছাড়া ছয়জনকে বাড়ির কাছেই গুলি করে হত্যা করা হয়।

সিরিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শত শত পরিবারকে।

সংঘর্ষের কারণে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে জানায় জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা। তারা সবপক্ষকে দ্রুত মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থী নেতৃত্বকে ‘ছদ্মবেশী জিহাদী’ বলে আখ্যা দিয়েছে ইসরায়েল। তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সিরিয়ায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার তারা সমর্থন করে না।

সিরিয়ার প্রভাবশালী নেতা আহমেদ আল-শারআ ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে বলেন, তারা দেশের বিভাজন চায়। তিনি দ্রুজ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

সাম্প্রতিক উত্তেজনায় ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অনুরোধেই মূলত সুয়েইদার দ্রুজদের সুরক্ষা দিতে ইসরায়েল পদক্ষেপ নেয় বলে মনে করা হচ্ছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *