গ্যাস বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জসহ গ্রাহকদের হয়রানি এবং জ্বালানি বিভাগের দুর্নীতিবাজদের সনাক্ত কর-বিচার কর: গ্যাস বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদ

গ্যাস বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জসহ গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধ এবং জ্বালানি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সনাক্ত ও বিচার করার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ২ ঘটিকার সময় সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক কোর্ট  পয়েন্টে গ্যাস বিদ্যুৎ গ্রাহক কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির উদ্যোগে এক বিরাট নাগরিক সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগে হয়েছে মহাদুর্নীতি। ২০১৪ সালে অনিয়ম দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধে গ্যাস ও বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পাইলট প্রকল্প হাতে নেয় জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্ট একটি কোম্পানী। এই কোম্পানীর অধীনে ২০১৫ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপন শুরু হয়। মিটারগুলো স্থাপনকালে তা বিনামূল্যে দেয়ার কথা হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে মিটারপ্রতি আবাসিকে মাসিক ৪০টাকা ও বানিজ্যিকে ২৫০ টাকা এবং গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ১০০ টাকার পরিবর্তী ২০০ টাকা নেয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং গ্রাহকদের সাথে রীতিমতো প্রতারণা। বিদ্যুৎ মিটারের মূল সমন্বয় হওয়ার পরও কোনো ভাড়া নেওয়া হবেনা। মিটার স্থাপনের সময় আবাসিক মিটারের ক্রয়মূল্য ছিল ৩২০০ টাকা এবং বানিজ্যিক মিটারের মূল্য ছিল ১৪০০০ টাকা। সেই অর্থ আদায় করা হয়েছে বিগত দুর্নীতবাজদের পাহারাদার সরকারের আমলে। এটা জনগণের পকেট কাটার শামিল। বিদ্যুতের এক শতাংশ সিস্টেম লসের জন্য জনগণকে গুনতে হয় ৭০০ কোটি টাকা। অংকের হিসাবে মোট ৭৭০০ কোটি টাকা অর্থ্যাৎ বছরে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা বিগত হাসিনা সরকার বিনা কারনে খরচ করে। গত ২০২৩ সালের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ সরকারী ব্যয় ছিল ২৬ হাজার কোটি টাকা। এমনিতে বিগত সরকারের সময় দেশের দুর্নীতি  ও লুটপাটে গত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে ২৪টি ঘটনায় ৯২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বক্তারা চলমান প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে বলেন ,এই অন্তর্বর্তী বিপ্লবী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য দেশে থাকা আরেকটি দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা নিয়ে মারামারি করে লাশ ফেলে চক্রান্ত শুরু করেছে। বিপ্লবী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্য বলেন, ২০০৭ সালের ওয়ান-ইলিভেনের সরকারের মতো শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ভূমিকম্পের ন্যায় অভিযান শুরু করুন। সিংহের মতো গর্জে উঠুন এবং শেয়াল ও কবুতরের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করুন। জ্বালানি উপদেষ্টাকে সৎ ও যোগ্য আখ্যা দিয়ে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে গ্যাস বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জসহ গ্রাহকদের হয়রানি এবং জ্বালানি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সনাক্ত করে বিচার করার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য জোর দাবি জানান।
সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিতে¦ নাগরক সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জননেতা মকসুদ হোসেন। কেন্দ্রীয় সদস্য সরোজ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের উপদেষ্টা ও পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা নেছারুল হক চৌধুরী বুস্তান স্যার, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. অরুণ কুমার দেব, মামুন রশীদ এডভোকেট, মীর আব্দুল করিম পাখি মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল গফুর, আব্দুল মতোয়ালী ফলিক, সাংবাদিক শহীদ আহমদ খান সাবের, তারেক আহমদ বিলাস, আফসারুজ্জামান আফসার, ইউনুস আহমদ, পিয়ার হোসেন, হকার্স নেতা শাহজাহান আহমদ, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইমাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ নুর আহমদ জুনেদ, শেখ মো. দীপু, হকার্স নেতা জানে আলম, মো. মধু মিয়া, হাফিজ শরীফ আহমদ প্রমুখ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *