কথিত পীর আনোয়ার ভান্ডারীকে গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল টুকেরবাজার ইউনিয়নের চাতল এলাকা

কথিত পীর বাবা ‘আনোয়ার ভান্ডারী” কে গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠছে সিলেট শহরতলীর সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের বৃহত্তর চাতল এলাকা। নিজগৃহকে মাজার বানিয়ে সপ্তাহে নাচ গানের আসর বসিয়ে নানা অসামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলো সে। এলাকার মুরব্বী, যুব ও ছাত্রসমাজ এর প্রতিবাদ করলে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আসামী করেছে মসজিদের ইমাম ও মুরব্বিদের। এই ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকার মুসল্লীরা। আনোয়ার ভান্ডারীকে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে আইনশৃখংলার অবনতি ঘটলে এর দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে বলে হুশিযারি উচ্চারণ করেছেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চাতল বাজারে মানবন্ধন পরবতীর্ বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শুধু আনোয়ার ভান্ডারি নয়, আরো যারা মাদক ব্যবসা জুয়াসহ অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, চাতল গ্রামের আমিরুল্লার পুত্র আনোয়ার ভান্ডারী নিজের ঘরকে মাজার ও বাড়ির পাশের একটি বটগাছকে আল্লাহ দাবিসহ নানা ধমীর্য় স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলে বিভিন্ন সময় বক্তব্য দেয়। ঘরে নারী পুরুষকে নিয়ে মদ গাজার আসর বসায়। প্রতি বৃহস্পতিবার উচ্চস্বরে গান বাজনাসহ অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে। সম্প্রতি এলাকার আলেম, ছাত্র ও যুবসমাজ তাকে অপরাধ কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। সে উল্টো চাঁদা দাবি করেছেন মর্মে আদালতে গিয়ে মামলা দায়ের করে। যেখানে চাতল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম, মুরব্বী ও যুব—ছাত্র সমাজের ১০জনের নাম উল্লেখ করে অভিযুকক্ত করে।

এদিকে ইমামসহ যুবসমাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর পেয়ে বিক্ষেভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। এ নিয়ে যে কোন সময় এর জেরে আইনশৃংখলার অবনতি ঘটতে পােও এলাকায়। অনুষ্ঠিত সমাবেশে শুক্রবার রাতের মধ্যে গ্রামবাসীর কাছে নিশর্ত ক্ষমা চেয়ে মামলা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে অসামাজিক কার্যকলাপ না করার ঘোষণা না দিলে যে কোন পরিস্থিতি তৈরীর জন্য প্রস্তুত থাকার হুমকি দেয়া হয়। একই সাথে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে আইনের হেফাজতে না নিলে এর দায়ভার পুলিশকেই নিতে হবে বলে জানানো হয়।

এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, আদালত থেকে একটি মামলা তদন্তের জন্য এসেছে। আমরা জানতে পেরেছি সেখানে ইমাম সাহেবসহ মুরব্বিদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এলাকাবাসী থানায় এসে দেখা করে বিস্তারিত বলেছেন, আনোয়ার ভান্ডারী অসামাজিক কার্যকলাপ আর করবেনা বলে জানিয়েছে। সে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলেছে। যদি সে দ্রুত ভুল বুঝে বিষয়টি সমাধান না করে পুলিশ এলাকাবাসীর পাশে রয়েছে এবং যথাযত ব্যবস্থা নিবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে এলাকাবাসীল পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন চাতল মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আহসান উল্লাহ, চাতল মসজিদের মুতাওয়াল্লি মখলিছুর রহমান, বিশিষ্ট মুরব্বি মুহিবুর রহমান, সাংবাদিক নূর আহমদ, ইউপি মেম্বার মো: ফয়জুল হক, মাওলানা ফাহিম আহমদ, মাওলানা যুবায়ের বিন এরশাদ, মাওলানা আব্দুর রহমান, কয়েছ আহমদ, রুমেল আহমদ, সাদিক, আব্দুস সামাদ আজাদ, আতিক প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রনেতা মো: দিলোয়ার হোসেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *