যথাযথ শ্রমিক প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মজুরি বোর্ড গঠন করে বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নি¤œতম মজুরি নির্ধারণের দাবিতে ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির উদ্যোগে লাল পতাকা র্যালি ক্বীণ ব্রীজের (দক্ষিণ পাড়) হতে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কদমতলী পয়েন্টে গিয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি শাহিন আহমদ এর সভাপতিত্বে এবং জেলা কমিটির ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাগর আহমদ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি মো: ছাদেক মিয়া, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিন রাজু, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন মিয়া, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি জয়নাল মিয়া, জেলা কমিটির অন্যতম নেতা আনোয়ার হোসেন, বন্দর বাাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, আম্বরখানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাশেদ আহমদ, চন্ডিপুল আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মহিদুল ইসলাম, বাবনা আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুমনি মিয়া রসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যে শ্রমিকের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফলে মালিকেরা মুনাফার পাহাড় গড়ে তোলেন সেই শ্রমিককের জীবনের ন্যূনতম মূল্য দেন না মালিকরা। শ্রমিকদের ধারাবাহিকভাবে সুসংগঠিত আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে কিছু সুযোগ সুবিধা অর্জিত হলেও সামগ্রিকভাবে শোষণ-নির্যাতনের অবসান হয়নি। হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের যেমন নেই চাকরির নিশ্চয়তা, তেমনি নেই জীবনের নিরাপত্তা। হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিকরা দেশে প্রচলিত শ্রমআইনের তোয়াক্কা না করে তাদের মনগড়া ইচ্ছামাফিক স্বেচ্ছাচারী কায়দায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ অনুযায়ি নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, চাকরির নিশ্চয়তা, স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ, বাসস্থানের ব্যবস্থাসহ শ্রম আইনের সুযোগ সুবিধা শুধু কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ বাস্তবে কার্যকরী নেই। শ্রমআইন অনুযায়ি প্রতি ৫ বছর অন্তর নি¤œতম মজুরিহার ঘোষণার আইন থাকলেও হোটেল সেক্টরে সর্বশেষ গত ০১ মার্চ ২০১৭ নি¤œতম মজুরি হার ঘোষণার ৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সাবেক আওয়ামী সরকারের আমলে যথাযথ শ্রমিক প্রতিনিধি না রেখে দলীয় বিবেচনায় মজুরি বোর্ড গঠন করে শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে চলেছে। নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের গঠিত মজুরি বোর্ড বাতিল করে যথাযথ শ্রমিক প্রতিনিধির উপস্থিতিতে মজুরি বোর্ড গঠন করে বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের দাবি জানান।
সেইসাথে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুর ও সাভারের গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিল। গত ৩ সেপ্টেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইয়া আন্দোলনরত শ্রমিকদের টোকাই ও বহিরাগত বলে উল্লেখ করেন। যা স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের ন্যায় শ্রমিক আন্দোলনে ‘টোকাই‘ ও ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলন দমনের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন এবং উনার বক্তব্যের প্রতি তিব্র প্রতিবাদ জানান।