সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, বিশ্বজুড়ে এখন আলোচনার বিষয়বস্তু হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যু। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় ভেঙে তেহরানের অভিজাত এলাকায় কীভাবে গুপ্ত হামলার শিকার হলেন হামাসের এই শীর্ষ নেতা।
হামাসের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে ইসরাইল। কিন্তু ইসমাইল হানিয়াকে বহুবার হত্যাচেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় তারা।শেষ পর্যন্ত এই প্রচেষ্টায় সফলতার মুখ দেখেছ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। সবার জল্পনা, ঠিক কোন কায়দায় হানিয়া হত্যার অভিযানে সফল হল ইসরাইল।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, হানিয়া হত্যার পেছনে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার মোসাদের নিয়োগ করা ইরানি এজেন্ট গুপ্তঘাতকের ভূমিকায় ছিল। হানিয়া যে ভবনে ছিলেন সেটা ছিল দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইজিআরসি) নিয়ন্ত্রণাধীন। আর সেই সুরক্ষিত ভবনে ঢুকে পড়ে ঘাতক ইরানি এজেন্ট।
আজ থেকে আরো দুই মাস আগে হানিয়া হত্যার জন্য ওই ভবনের তিন কক্ষে বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখে মোসাদের দুই ইরানি এজেন্ট। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জানাজায় অংশ নিতে গত মে মাসে ইরান সফর করেছিলেন হানিয়া। মূলত ওই সময় হানিয়া হত্যার বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখে তারা। তবে অধিক জনসমাগমে অভিযান ব্যর্থ হতে পারে বলে পরিকল্পনা পেছায় মোসাদ।
অপেক্ষা করা হয় সুযোগ সময়ের জন্য। আর ইসরাইলির জন্য বহুল সেই আকাঙ্খিত দিন ছিল গত বুধবার। রাত প্রায় ২টার দিকে হানিয়ার অবস্থান সুনিশ্চিত করে রিমোট কন্ট্রোলে সেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসসহ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলে যাদের হুমকি মনে করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে থাকে মোসাদ। যুক্তরাষ্ট্রের সিআইয়ের পর মোসাদকে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ভাবা হয়। মোসাদের প্রায় ৭ হাজার প্রশিক্ষিত গোয়েন্দা সদস্যের জন্য ইসরাইলের বার্ষিক বাজেট ৩ বিলিয়নের মতো।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখন্ডে ঢুকে পড়ে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। ভেঙে পড়ে ইসরাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার। হামাসের হতবাক করা হামলায় নিহত হয় ১২০০ ইসরাইলি নাগরিক। একইসঙ্গে জিম্মি করা হয় প্রায় ২৫০জনকে।
এরপর প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা। ওই হামলার পর থেকে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নেয়া।
তথ্যসূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ