সিলেটে আত্মসমর্পনের পর কারাগারে ৩ চাঁদাবাজ

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: সিলেটে আদালতে আত্মসমর্পনের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে চাঁদাবাজী মামলার ৩ আসামিকে।

তারা হলেন ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের একলাছ মিয়ার ছেলে  নজরুল মিয়া (৩১), তার ভাই বদরুল মিয়া (৩৪) ও একই এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে তোফায়েল  মিয়া।

সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (তৃতীয়) বিচারক ছৈয়দ ফখরুল আবেদীন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের আব্দুল রুপের স্ত্রী সাজনা বেগম বাড়ীর বাউন্ডারী দেওয়াল নির্মাণের উদ্যোগ নিলে আসামিরা তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে গত ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল রাত ৩টার দিকে বদরুল, তোফায়েল ও নজরুল বন্দুক পিস্তল রামদা ছুরি শাবল লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সাজনা বেগমের বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার ছেলে তুহিন মিয়া (২০), একই এলাকার মৃত গুলু মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (২৪), মৃত আয়না মিয়ার ছেলে আব্দুল মুমিন (২২) ও আব্দুল বারীর ছেলে শিবলু মিয়া (৩৫)। তারা সাজনার বোনপোর বুকে, চোখে গুলি করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় সাজনা বেগম এই ৯ জনকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় চাঁদা ও বন্দুক দিয়ে গুলি করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন (নং -২(৬/৪/২০১৪)।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই বছরের ২২ জুন ওসমানীনগর থানার তৎকালীন এস আই সাইফুল আলম ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (নং-৭৫) দাখিল করেন এবং ২০১৫ সালের ১৭ মে ওই ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী ও ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর আদালত বদরুল মিয়া, তোফায়েল মিয়া ও নজরুল মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং আসামী তুহিন মিয়া, শিপন মিয়া, আব্দুল মোমিন ও শিবলু মিয়াকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৭ দিনের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এছাড়া আসামী লটু মিয়া (৪৮) মামলা চলাকালে মারা যান এবং তার ছেলে জুবায়েরের (২২) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

এরপর ৩ আসামি প্রায় ২ মাস কারাগারে কাটানোর উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান। মুক্ত থাকা অবস্থায় তারা বারবার সাজনা বেগম ও তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে মোটা অঙ্জের চাঁদা দাবি করেন। এমনকি তাদের বারবার হত্যারও হুমকি দিতেন বলে জানিয়েছেন সাজনা বেগম ও তার স্বজনরা। এ অবস্থায় গত ২ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামিদের ২৫ জুনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলেও তারা তা অমান্য করেন। অবশেষে তারা সোমবার আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট পারভীন বেগম।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *