বিয়ানীবাজারের বৈরাগীবাজার থেকে আব্দুল্লাপুর রাস্তার বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

সিলেট-জকিগঞ্জ মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত সিলেট- বারইগ্রাম বিয়ানীবাজার সড়কের আব্দুল্লাপুর থেকে বৈরাগীবাজার পর্যন্ত রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষদের। সড়কটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত ২০২২ সালের বন্যায় সড়কের অনেকস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানচলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এতে প্রায়ই উক্ত সড়কে যানবাহন ও পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। সড়কের দুরাবস্থা দেখার যেন কেউ নেই..? সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে বেহাল দশা বিরাজ করছে। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে পানি জমে গর্তগুলোতে কাদা, নর্দমা একাকার হয়ে সড়কটি পুকুরে পরিনত হয়!

জানা গেছে, ৫নং কুড়ারবাজার ইউনিয়ন ও ৪নং শেওলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিলেট জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র বাইপাস সড়ক হিসেবে ওই সড়কই যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাই হচ্ছে এটি। এমনকি উপজেলার ঐতিয্যবাহি বৈরাগীবাজার সংলগ্ন আঙ্গারজুর, কিয়াছারা, গড়রবন্দ, আরিজখাটিলা, শালেশ্বর, বালিঙ্গা, নয়াগাও, নামনগরসহ ১০/১২টি গ্রামের প্রায় হাজার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসা এই সড়কটি। এর মধ্যে উল্লেখিত গ্রাম গুলো থেকে প্রায় ৪/৫ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন বৈরাগীবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, বৈরাগীবাজার আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজ, বৈরাগীবাজার আদর্শ বিদ্যানিকেতন, বৈরাগীবাজার সিনিয়র মাদ্রাসা, খশির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আঙ্গারজুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খশিরবন্দ হাজারীশাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গড়রবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বৈরাগীবাজারের একমাত্র স্বাস্থ্য কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়া আসা করে কিন্তু কয়েক বছর ধরে সড়কের বেশীর ভাগ অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে বিপাকে পড়েছেন স্কুল কলেজে পড়ূয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। গর্তগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে যেন পুকুরে পরিনত হয়ে যায়। সড়কটি খাই খন্দকের কারনে সড়কে দুর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অনেক প্রাণহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদেরকে। এ ছাড়া সড়কে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো সড়কের ভাঙ্গার কারনে একটি অপরটিকে ওভারট্যাক করতে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এর জন্য ওই সড়কে যানচলাচল আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈরাগীবাজার আইডিয়াল কলেজের একাদশ শেণ্রীর কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবেদককে জানায়, আমরা আব্দুল্লাপুর থেকে প্রায় ১ কিঃমিঃ জায়গা পায়ে হেঠে কলেজে যাই। কারণ আমাদের চলাচলের প্রধান এই সড়কের এমন অবস্থা হয়েছে যে যেখানে যেতে ৫ মিনিটে কলেজে পৌছার কথা সেখানে লেগে যায় ২০ মিনিটের বেশি সময়। সড়কের দশা বেহাল হওয়ায় আগের মতো সিএনজি কিংবা অটোরিক্সা পাওয়া যায়না তাই অপেক্ষা করে সময় নষ্ট না করে আমরা পায়ে হেটেই কলেজে যাচ্ছি।ৃ হেটে গিয়ে অনেকটা কান্ত হয়ে যাই যার কারনে ক্লাসে তেমন মনযোগ থাকেনা। বিশেষ করে চরম বিপাকে পড়তে হয় পরিক্ষার সময় কারণ পরিক্ষার নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হওয়া অনেক কষ্টসাধ্য। তাই যতাযত প্রদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

স্কুলে যাতায়াতের প্রধান সমস্যা কি এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বৈরাগীবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী মুক্তা জানায়, ভাই কি আর বলবো স্কুলে যাওয়ার মূল সমস্যা এই সড়কটি। সড়কের অবস্থা এত খারাপ হওয়ায় প্রতিদিন স্কুলে যেতে মন চায়না। এর মধ্যে এখন প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়, সামান্য বৃষ্টি হলেই আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়। কারন রাস্তায় অনেক বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে গর্তের মধ্যে ময়লা জমে থাকে আর এই ময়লা বৃষ্টির পানি পেলে ভাগাড় হয়ে যায়। ফলে ভাল জামা পড়ে গেলে আর জামা ভাল থাকে রাস্তায় কাদায় নোংড়া হয়ে যায়। তাই সড়কটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।

বৈরাগীবাজার থেকে আব্দুল্লাপুরের সচেতন মহল ও ব্যবসায়ীরা জানায়, ঐতিয্যবাহি বৈরাগীবাজার এখন আর বাজার বলা যায় না, যেই বাজারটি ছিলা বিয়ানীবাজার তথা সিলেটের নামকরা এক ব্যাবসায়ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। যেখানে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত, বৈরাগীবাজারে আসার একমাত্র রাস্তাটি খারাপ হওয়ায় কেনাকাটা করার জন্য মানুষ বাজারে আসতে ভয় পায়। গত জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব হইতে জনপ্রতিনিধি সহ উর্ধতন মহলের আস্বাস পেয়ে থাকলেও আজঅবধী রাস্তাটি মেরামত করা হয় নাই। অভিলম্বে রাস্তাটি মেরামত না করা হলে স্কুল কলেজে আসা ছাত্র/ছাত্রী সহ বাজার ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়তে হচ্ছে এবং বাজারের উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। তাই সড়কটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাকাবাসী।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *