সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন এক ইসরাইলি নারী। তিনি গাজার সুড়ঙ্গে কাটানো ১৬ দিনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ নামে ৮৫ বছর বয়সি ওই নারীসহ আরও এক নারীকে সোমবার রেড ক্রসের হাতে তুলে দেয় হামাস যোদ্ধারা। এরপর তাকে নেওয়া হয় তেল আবিবের একটি হাসপাতালে। সেখানে সাংবাদিকদের কাছে তার জিম্মিদশার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন লিফশিৎজ।
তাকে হস্তান্তরের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক অস্ত্রধারীর সঙ্গে তিনি করমর্দন করছেন। হাসপাতালে এর কারণ জানতে চান এক সাংবাদিক।
জবাবে লিফশিৎজ বলেন, জিম্মিকারীরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে। অন্য যারা জিম্মি আছে, তারা ভালোভাবেই আছে।
এই বৃদ্ধা বলেন, গাজার যে সুড়ঙ্গের ভেতরে রাখা হয়েছিল, তার পরিবেশ বেশ পরিচ্ছন্ন। সেখানে ঘুমানোর জন্য মেঝেতে তোষক পাতা ছিল। গাজায় ধরে নেওয়ার সময় এক ব্যক্তি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সেখানে নেওয়ার পর তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়।
তারা চেয়েছে, আমরা যাতে অসুস্থ না হই। দুই-তিন দিন পর পর আমাদের সঙ্গে একজন করে চিকিৎসক থাকতেন। বন্দিদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা ছিল। নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান আছে, এমন একজন নারীও ছিলেন সেখানে।
সুড়ঙ্গে বন্দিদশার মধ্যে তাদের কী খাবার দেওয়া হয়েছে, জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে লিফশিৎজের মেয়ে শ্যারন লিফশিৎজ বলেন, হামাস যোদ্ধারা যা খায়, সেই একই খাবার, অর্থাৎ রুটি-পনির আর শসা খেয়ে থেকেছেন তার মা।
বিবিসি জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় রাফাহ সীমান্ত পয়েন্টে ইয়োশেভেদ লিফশিৎজের সঙ্গে ৭৯ বছর বয়সি আরেক নারী নুরিত কুপারকেও মুক্তি দেওয়া হয়।
ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ মুক্তি পেলেও তার স্বামী ওদেদ (৮৩) এখনও বন্দি। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার দিনে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিম্মি হওয়ার মুহূর্ত স্মরণ করে ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ বলেন, গাজায় নেওয়ার সময় তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তাতে তিনি ব্যথা পেয়েছেন। শ্বাসকষ্টও হয়েছিল। তিনি বলেন, যেন নরকের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম।
তবে বেশিরভাগ বন্দির সঙ্গেই হামাস যোদ্ধারা ‘ভালো আচরণ’ করেছে বলে জানান এই বৃদ্ধা।
মোটরসাইকেলে করে এই নারী ও তার স্বামীকে গাজায় ধরে নেয় হামাস যোদ্ধারা।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মা-মেয়েকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।