সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ জনসমাবেশ করছে বিএনপি। এই মহাসমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি ছিল আগে থেকেই। বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার আগে আজকের সমাবেশকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আজকের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের বড় কর্মসূচি ঘোষণা আসতে পারে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
আগামী ২৭ অথবা ২৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ বা মহাসমাবেশের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব শুরু হতে পারে। আন্দোলন সুশৃঙ্খলভাবে সফল করতে ইতোমধ্যে সব পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনসমাবেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র আরও জানায়, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য শেষবারের মতো আজ সরকারকে কড়া বার্তা দিতে চায় বিএনপি। সোমবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে আজকের জনসমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগে আলটিমেটাম দেওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন নীতিনির্ধারকরা। পরে নেতারা মত দেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
শোনা যাচ্ছে, বিএনপি পূজা শেষে এ মাসের শেষ দিকে লাগাতার কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাও এবং সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের মতো কর্মসূচি। ঢাকার পাশাপাশি জেলা ও মহানগরেও একই কর্মসূচি দেওয়া হবে। নেতারা জানান, লাগাতার কর্মসূচিও আজকের জনসমাবেশ থেকে ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার পরবর্তী জনসমাবেশ বা মহাসমাবেশ থেকেও ঘোষণা আসতে পারে। তবে আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি না রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় একদফা দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে গণসংযোগ কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের ব্যানারে ঢাকাসহ বড় কয়েকটি বিভাগে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে একই দাবিতে বিএনপি ছাড়াও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট আজ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিজ নিজ ব্যানারে জনসমাবেশ করছে।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্গাপূজার মধ্যে সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। অন্যথায় আন্দোলনের মধ্য দিয়েই পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। সামনে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আর যদি অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, গায়েবি মামলা করা হয় দেশের মানুষ প্রতিরোধ করবে। সেই প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে বিজয় আসবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দুর্গাপূজার পর নতুন কর্মসূচি আসছে। সেটা গতানুগতিক কর্মসূচি হবে না। কঠিন এবং কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
একদফা দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম ধাপে রোডমার্চ ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি, যা ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম অঞ্চলে রোডমার্চের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চট্টগ্রামের রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশ থেকে দ্বিতীয় ধাপের টানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি আজ ঢাকায় জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। ওইদিন বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন, ঢাকার জনসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। সেই কর্মসূচিই হবে শেষ কর্মসূচি।