৩ লাখ টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট দিচ্ছিলেন তারা:গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ডিবিপুলিশের

নিউজ ডেস্ক:

ভর্তি না হয়ে এবং পড়ালেখা ছাড়াই সার্টিফিকেট মিলছে মাত্র ৩ লাখ টাকায়, যা দেখতে আসল সার্টিফিকেটের মতোই। শুধু তাই নয়; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটেও যার তথ্য পাওয়া যায়। গোপন সংবাদে এমন তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট তৈরি চক্রের চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার সকালে রাজধানীর রামপুরা ও লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট জব্দ করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী নুরুন্নাহার মিতু, প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা) ইয়াসিন আলী ও দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির পরিচালক বুলবুল আহমেদ বিপু।

ডিবির ভাষ্য, চক্রের হোতা প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান। তিনি বিদেশে উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন। দেশে ফিরে শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন নকল সার্টিফিকেট তৈরিতে। জিয়া মূলত একজন সহযোগীকে দিয়ে এই কাজ করাতেন। তার নাম ইয়াসিন। আর তাকে এই কাজে সহায়তা করতেন দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির পরিচালক বুলবুল আহমেদ। তারা এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের কাছে এসব জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করেছেন।

গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান জানান, অনেকদিন ধরেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশনসহ বিভিন্ন বোর্ডের সেকেন্ডারি, হায়ার সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বিক্রয় করে আসছিল একটি চক্র। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার মিতুকে গ্রেফতার করা হয়।

মশিউর রহমান জানান, অনলাইন বিজ্ঞাপন দিয়ে জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারি। তারা সার্টিফিকেট, মার্কশিট, ট্রান্সক্রিপ্ট ও টেস্টিমোনিয়াল বানিয়ে দেন। যাতে যারা সার্টিফিকেট কেনেন তারা দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতাররা বোর্ড-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরবরাহ করা মূলকাগজ দিয়েই মার্কশিট ও সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রি করতো। এরপর সেগুলো কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করতো, যাতে করে অনলাইন ভেরিফিকেশনে সত্যতা পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী শুক্রবার সকালে লালবাগ থানার অন্তর্গত বড়ঘাট মসজিদ এলাকার কাশ্মীরি গলির একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইয়াসিন আলী ও দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির পরিচালক বুলবুল আহমেদ বিপুকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় ওই বাসা থেকে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, প্রিন্টারসহ বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে সংগ্রহ করা ব্ল্যাঙ্ক মার্কশিট সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ভুঁইফোঁড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট, মার্কশিট, ট্রান্সক্রিপ্ট ও টেস্টিমোনিয়াল তৈরি করা হতো। গ্রেফতার নুরুন্নাহার মিতু ছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *