চারিকাটা উচ্চ বিদ্যালয় কর্মচারী নিয়োগের তদন্ত রির্পোট নিয়ে এলাকায় তোলপাড়, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে স্কুল

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগে অসংগতি, অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে মহাপরিচালক ও উপ-পরিচালক বরাবরে অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক (খণ্ডকালীন) মোঃ সাজ উদ্দিন পৃথক পৃথক ভাবে দুটি অভিযোগ দাখিলের প্রেক্ষিতে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল ২০২২ ইং মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা এবং ১০ মে ২০২২ ইং উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চল, বরাবরে চারিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগে অসংগতি, অনিয়ম, দুর্নীতি উল্লেখ করে পৃথক পৃথক ভাবে দুটি অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগ দাখিলের প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
বিগত ২৬ মে ২০২২ স্কুলের অফিস মিলনায়তনে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণের পর দুটি অভিযোগের মধ্যে মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরিত অভিযোগটির আপোষনামা করা হয়।
কিন্তু উক্ত স্কুলের কর্মচারী নিয়োগে অসংগতি, অনিয়ম, দুর্নীতির জন্য বিগত ১০ মে ২০২২ তারিখের আনিত অভিযোগের ২৪ মে ২০২২ তারিখে উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চল, সিলেটের স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে তদন্ত জন্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
তদন্তের অনুলিপিতে বাদীকে স্বশরীরে উপস্থিত রেখে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়। বাদীকে না জানিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে জৈন্তাপুর উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আজিজুল হক খোকন আপোষনামায় ফ্লুইড দিয়ে মুছে নকল করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে তদন্ত রিপোর্ট প্রেরণ করেন বলে অভিযোগ বাদীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, স্কুলে বেশ কয়েকবার কর্মচারী নিয়োগর জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কিন্তু বারবার নিয়োগে অসংগতি, অনিয়ম, দুর্নীতির কারনে পরীক্ষার্থীর অভিযোগের কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ফের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তী প্রকাশিত হলে পরীক্ষার পূর্বেই স্বজনপ্রীতি ও উৎকোচ বানিজের অভিযোগ এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
আপোষনামা লিপিকার বাউরভাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল বলেন, আমি আপোষনামা লিখেছি। আপোষনামা লিখার পর সকলের স্বাক্ষর শেষে আপোষনামা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে দেওয়া হয়েছিলো। এখন দেখি আমার হাতের লেখা আপোষনামায় ফ্লুইড দিয়ে মুছে এডিট করে আরও কিছু লেখা সংযুক্ত করা হয়েছে যা আমি নিজে লিখিনি বা জানিনা।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ আজিজুল হক বলেন, তিনি উর্দ্ধতন কমর্কতার নির্দেশে তধন্ত রিপোট তৈরী করেছেন, এবিষয়ে কোন বক্তব্য নেই বলে জানান।
সিলেট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আপোষনামা জাল কি না জানিনা। আপোষনামার আলোকে বিষয়টি শেষ হয়। তিনি আরও বলেন আপনারা নিয়োগের বিষয়ে এত বাড়াবাড়ি কেনো করেছেন আমি বুঝিনা। তারপরও বলবো আমার অফিসে আসেন, চায়ের দাওয়াত রইল।
সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির আহম্মদ বলেন, অভিযোগের পর তদন্তের জন্য মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। আপোষনামা জাল করে তদন্ত রিপোর্ট প্রেরণ আমি জানিনা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।
কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *