সন্তানকে হত্যা করে ধান ক্ষেতে ফেললেন মা…

নিউজ ডেস্ক:: শিশুসন্তানকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে মাকে আটক করেছে থানা পুলিশ। শিশুসন্তানকে হত্যা করে লাশ ধান ক্ষেতে ফেলে দেন মা। এরপর শিশুকে খুঁজে না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হয়।

এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের পাতিলাপুর মিয়াপাড়া গ্রামে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিজ সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মা ফেরদৌসি বেগম। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের পাতিলাপুর মিয়াপাড়া গ্রামের নুর আলম মিয়ার ছেলে ফরহাদ হোসেন (১০) গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিখোঁজ হয়। পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজির করে না পেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর শিশুটির মা ফেরদৌসি বেগম উলিপুর থানায় সন্তানের নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করেন।

ওই দিন পরিবারের পক্ষ থেকে ফরহাদের সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর সকালে নিখোঁজ শিশুর বাড়ি থেকে ২০০ গজ দক্ষিণে ধানক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।

নিহত ফরহাদ হোসেন স্থানীয় ঘাটিয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা নুর আলম বাদী হয়ে ওই দিন (১০ সেপ্টেম্বর) রাতেই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে উলিপুর থানায় মামলা করেন। এরপর থানা পুলিশ শিশু ফরহাদ হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলাটির তদন্ত শুরু করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ফরহাদ রাতে দেরি করে বাড়িতে ফেরায় মা ফেরদৌসি তাকে অতিরিক্ত শাসন করতে গিয়ে আঘাত করলে ফরহাদের মৃত্যু হয়। সন্তানের লাশ গুম করে এবং হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য তিনি লাশটি রাতেই একই গ্রামের আকবর আলীর ধানক্ষেতে ফেলে রেখে আসেন। এরপর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে থানায় জিডি ও মাইকিং করা হয়। এদিকে ২ দিন ধানক্ষেতে রোদ-বৃষ্টিতে পড়ে থাকায় ফরহাদের মৃতদেহ অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমীন জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে শিশুর মাকে সন্দেহ করা হয়। এরপর সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) মা ফেরদৌসি বেগমকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, হত্যা মামলাটির তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অধিকতর তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির জানান, শিশুটির মা ফেরদৌসি বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *