ওসমানীনগরে বিষক্রিয়ায় বাবা-ছেলের মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক:: ওসমানীনগর উপজেলার একটি বাড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের পাঁচ সদস্য বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত ডিআইজি) মো. ফরিদ উদ্দিন।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে কীভাবে বিষক্রিয়া ঘটেছে, তা তদন্তের আগে বলা যাচ্ছে না। যেসব নিকটাত্মীয় বাসায় ছিলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। বিষক্রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছেলে মাহিকুল ইসলাম (১৮) মারা গেছেন। মূলত ওই বাসায় তারা উঠেছিলেন ছোট ছেলের চিকিৎসার জন্য।

তিনি আরও বলেন, সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে তারা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বজনরা ডাকাডাকি করলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ পায় না। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে দুইজন মারা যান।

এদিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, মারা যাওয়া দুইজনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আর অসুস্থ তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে।

খাবারের বিষক্রিয়ায় এমনটি ঘটতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, অসুস্থ ৩ জনের সুচিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, যুক্তরাজ্য থেকে ১২ জুলাই তারা দেশে আসেন। ১৮ জুলাই ওসমানীনগরের তাজপুরে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। ছেলের চিকিৎসার সুবিধার্থে বাসাটি ভাড়া নিয়ে তারা এখানে উঠেছিলেন।

স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার (২৫ জুলাই) রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিকুল তার স্ত্রী সন্তানসহ একটি কক্ষে এবং তার শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুলসহ তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় ৯৯৯ নম্বরে কল করেন।

মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পুলিশ এসে বাসার দরজা ভেঙে তাদের অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। হাসপাতালে নেওয়ার পর রফিকুল ও তার ছোট ছেলে মাহিকুল মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রফিকুলের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও সামিয়া ইসলাম (২০)।

এ ঘটনাটি সিলেটজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। দুপুরে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার হুলিয়ারবন্দ এলাকায় তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ঝলক পালের মালিকানা ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে যুক্তরাজ্য ফেরত রফিকুলসহ তার পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *