সিলেটে বানভাসীদের মুখে হাসি ফোটালেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ

নিউজ ডেস্ক:: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। এরমধ্যে সিলেট মহানগর ও শহরতলীর সদর উপজেলায়ও হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এ উপজেলার সাহেববাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজেও প্রায় হাজারখানেক মানুষ আশ্রিত ছিলেন। বর্তমানে আছে প্রায় ৮শ’ জন। তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে গেলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকেলে তিনি এই আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। এসবের মধ্যে ছিল রান্না করা ও শুকনো খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি।

 

এসময় তিনি বলেন, বিপদে পুলিশ মানুষের পাশেই আছে, থাকবে। পুলিশ মহাপরিদর্শককে নিজেদের মধ্যে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত বানভাসীরা। তারা যেমন বন্যার সঙ্গে যুদ্ধের সাহস পেয়েছেন, তেমনি পেয়েছেন খাবারও।

সাহেবের বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত আবু বকর ত্রাণ পাওয়ায় আনন্দিত। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘আইজ আইজিপি স্যার আইয়া নিজর আতে আমরারে খানি দিছইন। এরলাগি আমরা খুব খুশি। আমরা সব পুলিশ ভাইয়াইনতরে ধইন্যবাদ জানাই।’

জমিরুন বিবিও (৬৫) এই আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন গত ৫-৬ দিন ধরে। ত্রাণ হিসাবে পাওয়া খিঁচুড়ি ও অন্যান্য শুকনো খাবার খেয়ে কোনমতে বেঁচে আছেন। পুলিশ মহাপরিদর্শকের দেয়া খাদ্যসামগ্রী পেয়ে তারও চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মৃদু হেসে বলেন, ‘কোনমতে বাছিয়া আছিরে বাবা হকল। আইজ বড় পুলিশ আইয়া নিজর আতে আমরারে খানি দিছইন। আমার পরিবারোর ৬ জন আছি ইনো। হকলেউ পাইছি। আমরা সবে পুলিশ বেটাইনতর লাগী দোয়া করিয়ার।’

 

সাহেববাজার এলাকার তরুণ সমাজসেবক নিজের নাম প্রকাশ না করেই বলেন, প্রায় ৮শ’ মানুষরে খানি দিছইন আইজিপি স্যারে। আশ্রয় কেন্দ্রর সব মানুষ খুশি।

তিনি আরও জানান, পাশের আরও দুটি আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ আইজিপির খাদ্যসহায়তা পেয়েছেন। তারা সবাই আইজিপি এবং সিলেটের উর্ধ্বতন সব পুলিশ কর্মকর্তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করছেন।

ত্রাণ তৎপরতা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখী হয়েছিলেন আইজিপি বেনজীর আহমদ। এসময় তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলের ৪ জেলায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী। এটা অভাবনীয় এবং অকল্পনীয়। সুনামগঞ্জের কোথাও শুকনো জায়গা নেই।

 

তিনি বলেন, মাত্র ১২ ঘন্টার ব্যবধানে এমন ভয়াবহ বন্যা আগে কখনো দেখেনি কেউ। পুলিশ সবসময় মানুষের পাশে থাকে। সিলেট এবং সুনামগঞ্জের মানুষের পাশেও তারা আছে। ইতিমধ্যে তারা ৫ হাজার মানুষকে উদ্ধার করেছে। তারা তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে তারা রান্না করা এবং শুকনো খাবার দিয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও কাজ করছে। আমরা পুলিশ কল্যাণ তহবিল থেকেও প্রায় কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে সরকারের সব উদ্যোগের সাথে আছি এবং থাকবো।

 

তিনি বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকেও দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর আহবান জানান। সেক্ষেত্রে পুলিশ তাদের সর্বোচ্চ সাহায্য করবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এসএমপি পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ, ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ, পিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পরিতোষ ঘোষ, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক)  ফয়সল মাহমুদ, পিপিএম; উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর)  আজবাহার আলী শেখ, পিপিএম; উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটি এসবি)  ইমাম মোহাম্মদ শাদিদ, সদ্য পুলিশ  পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এসএমপি (মিডিয়া) বি,এম, আশরাফ উল্যাহ তাহের, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর-অপরাধ) গৌতম দেব,  এয়ারপোর্ট থানা অফিসার ইনচার্জ খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির,কোতোয়ালি থানার ওসি আলী মাহমুদ, এয়ারপোর্ট থানা কমিউনিটি পুলিশের সদস্য সচিব  মো. রিমাদ আহমদ রুবেল।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *