বাড়িতে ডেকে প্রেমিককে হত্যার পর লাশ গুম, অতঃপর…

নিউজ ডেস্ক:: রাজশাহীতে বাড়িতে ডেকে প্রেমিককে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই প্রেমিকাসহ দুই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকালে তাদের গ্রেফতারের পর প্রেমিক রাশিদুল মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আরএমপির কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছা মহল্লার একরামুল ইসলাম ভাদুর মেয়ে মেরিনা খাতুন (২১) এবং ঈশারুল হকের মেয়ে নিশা খাতুন (২২)।

নিহত রাশিদুল (২৬) নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার পয়লান গ্রামের জহির মণ্ডলের পুত্র।  বৃহস্পতিবার হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মেরিনা খাতুন।

আরএমপির কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, রাশিদুলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে বুধবার সকালে তার বাবা থানায় একটি ডায়েরি করেন। তদন্তে নেমে  কাশিয়াডাঙ্গা থানার একটি টিম বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সায়েরগাছা গ্রামের বুলবুলের বাড়ি থেকে গৃহকর্মী মেরিনা খাতুনকে আটক করেন।

তিনি জানান, মেরিনার দেওয়া তথ্যমতে বুলবুলের বাড়ির ছাদের স্টোর রুম হতে প্রেমিক রাশিদুল মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মেরিনার বান্ধবী নিশা খাতুনকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাশিদুলের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত রাশিদুলের পিতা জহির মণ্ডল বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার কাশিয়াডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার পয়লান গ্রামের জহির মণ্ডলের ছেলে রাশিদুল মণ্ডল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। ধান কাটা শেষে সে সায়েরগাছা গ্রামে এসে রাজের কাজ করতেন। সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে কাজের সুবাদে  রাশিদুলের সঙ্গে গৃহকর্মী মেরিনা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক বছর তারা গোপনে দেখা সাক্ষাৎ করেন।

গত ১৪ জুন মঙ্গলবার রাতে রাশিদুলকে ফোনে ডেকে নেন মেরিনা খাতুন। বিয়ের জন্য চাপ দেন। রাশিদুল মেরিনাকে জানান পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরে জানাবে। এ সময় মেরিনা ওই রাতেই তাকে বিয়ে করতে হবে বলে চাপাচাপি শুরু করেন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে রাশিদুলকে মাটিতে ফেলে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মেরিনা। বান্ধবী নিশা খাতুনকে ডেকে নিয়ে ওই রাতেই বুলবুলের বাড়ির ছাদের স্টোরে রাশিদুলের লাশ গুম করেন।

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি আরও জানান, রাশিদুলের কোনো খবর না পেয়ে বুধবার সকালে তার বাবা জহির মণ্ডল থানায় একটি জিডি করেন। তদন্ত করতে গিয়ে রাশিদুল হত্যার রহস্য ও তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ হত্যারহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *