ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে নিয়ে দুটি চুবনি দেওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:: পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মুহম্মদ ইউনূসের পাশাপাশি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের চেষ্টা ছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করাল ড. ইউনূস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটা এমডির পদে তাকে থাকতে হবে। তাকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, গ্রামীণ ব্যাংকের উপদেষ্টা হতে, ইমেরিটাস উপদেষ্টা হিসেবে থাকার জন্য, আরও উচ্চ মানের। কিন্তু সেখানে সে থাকবে না। তার এমডিই থাকতে হবে। কিন্তু তার বয়সে কুলায় না।’

‘ড. ইউনূস কিন্তু আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। কিন্তু কোর্ট তো তার বয়স ১০ বছর কমিয়ে দিতে পারবে না। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে আছে ৬০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। তখন তার বয়স ৭১ বছর। বয়সটা কমাবে কীভাবে। মামলায় সে হেরে যায়। কিন্তু প্রতিহিংসা নেয় ড. ইউনূস এবং যেটা আমরা শুনেছি মাহফুজ আনাম। তারা আমেরিকায় চলে যায়, স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারির কাছে ইমেইল পাঠায়। বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিস্টার জোয়েলিক তার শেষ কর্মদিবসে কোনো বোর্ড সভায় না, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়।’

পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ তুলে ২০১৩ সালে প্রকল্পটিতে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। পরে বিশ্বব্যাংক এ ঘটনায় মামলা করে কানাডার একটি আদালতে। সেই মামলা বাংলাদেশের জন্য শাপেবর হয়েছে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আদেশ কানাডা থেকে আসার পর আর কেউ প্রশ্ন তোলার সুযোগই পায়নি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেওয়া রায়ে কানাডার অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো অনুমানভিত্তিক, গালগল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়।’

এটা একদিকে সাপেবর হয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, কারণ বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। পদ্মা সেতু নিয়ে সমালোকারীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেতুর কাজ তো হয়ে গেছে, এটা নিয়ে সমালোচনা করতে পারছে না। তাই তারা রেললাইন নিয়ে সমালোচনা করছে। আমার মনে হয় আমাদের সবার উনাকে চিনে রাখা উচিত। রেললাইন যখন চালু হবে তখন উনাকে একদিন চড়ানো উচিত।

‘আর খালেদা জিয়া বলেছিল- জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। ওখানে চললে নাকি ভেঙে পড়বে। তার সঙ্গে তার দোসররাও বলছে। এখন তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত। আর যিনি একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকেও পদ্মা নদীতে নিয়ে দুটি চুবনি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উচিত। আবার মরে যেন না যায়। একটু পদ্মা নদীতে চুবনি দিয়ে আবার সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলেই যদি এদের শিক্ষা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বড় বড় অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণী তারা এই ধরনের অর্বাচিনের মতো কথা বলে কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন? মেগা প্রজেক্টগুলো করে নাকি খুব ভুল করছি। বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করলেই তাদের গায়ে লাগে। কেন? তাহলে কি তারা এখনো পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের পদলেহনকালী খোসামোদি-তোষামোদির দল। গালি-টালি দেই না। দেওয়ার রুচিও নাই। কিন্তু একটু না বলে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের পদলেহনকালী সারমেয়র দল এখনো বাংলাদেশে জীবিত। এটা দুঃখজনক। এখনো এরা দেশের ভালো কিছু দেখে না। দেশ এগিয়ে গেলে তাদের ভালো লাগে না।’

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *