রুশ সেনারা কাজাখস্তান ছাড়বে না, আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: তিন দশকের মধ্যে মধ্যএশিয়ার দেশ কাজাখস্তানে সবচেয়ে বড় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে। চলমান সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটিতে রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ প্রশ্ন তুলে বলেন, কাজাখস্তান কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এ পরিস্থিতির সামাল দিতে পারত।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতি মোকাবিলায়  কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট তোকায়েভ রুশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান।রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন প্রায় আড়াই হাজার সেনা  ইতিমধ্যে  কাজাখস্তানে পৌঁছেছে।

কাজাখস্তানে গত শনিবার এলপিজির দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়। এর প্রতিবাদে রোববার দেশটির তেলসমৃদ্ধ প্রদেশ মানজিস্তাউয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে এই বিক্ষোভ আলমাতিসহ দেশটির অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬ জন বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট কোনো ধরনের সতর্কসংকেত ছাড়াই নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, তার অনুরোধে রাশিয়া ও প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা অস্থায়ীভাবে কাজাখস্তানে অবস্থান করবে। সেনা পাঠানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘বিশেষ ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন কাসিম।

রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রভুক্ত পাঁচ দেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার সামরিক জোটের (কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন-সিএসটিও) আওতায় সাময়িকভাবে সেনা মোতায়েন করেছে তারা।

তবে রুশ সেনারা আদৌ কাজাখস্তান ছাড়বে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, সাম্প্রতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, রুশ সেনারা একবার কোথাও ঢুকলে মাঝেমধ্যে তাদের সেখান থেকে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যথাযথভাবে বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার সক্ষমতা কাজাখ সরকারের নিজেরই ছিল। আর তেমনটা করা হলে বিক্ষোভকারীদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলাও বজায় থাকত।

কাজাখস্তান কেন রুশ সেনাদের সহযোগিতা চাইল, তা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, কেন তারা অন্য দেশের সহযোগিতার প্রয়োজন বোধ করল, তা পরিষ্কার নয়। আমরা এ ব্যাপারে আরও জানার চেষ্টা করছি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *