সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: সিলেটের গোয়াইনঘাটে মঙ্গলবার দিবাগত (১৬ জুন রাতে) দিনমজুরের পরিবারে তিন সদস্যকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার এ ঘটনায় স্বামী হিফজুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
বিষয়টি প্রেস ব্রিফিং করে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ পিপিএম।
তিনি বলেন, চিকিৎসাধীন হিফজুর রহমান আগের চাইতে সুস্থ আছেন। রোববার (২০ জুন) চিকিৎসকরা তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে এবং রোববারই তাকে আদালতে তোলার কথা রয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ হিফজুরকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানাবে বলে
মঙ্গলবার রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে ঘরের ভেতর তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- দিনমজুর হিফজুরের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩০) ও তাদের দুই সন্তান মিজান (১০) এবং তানিশা (৩)। নিহতদের লাশ ময়নাতদেন্তর জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এছাড়া গুরুতর আহত হন হিফজুর রহমান। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার (১৬ জুন) সকালে অনেক বেলা পর্যন্ত হিফজুরের ঘরের কেউ ঘুম থেকে উঠছিলেন না দেখে প্রতিবেশীরা হিফজুরের ঘরের সামনে যান। এসময় ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে দরজায় ধাক্কা দেন তারা। এসময় দরজার সিটকিনি খোলা দেখতে পান তারা। ভেতরে প্রবেশ করে তারা খাটের মধ্যে তিন জনের জবাই করা মরদেহ ও হিফজুরকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে গোয়াইনঘাট থানায় খবর দিলে একদল পুলিশ গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে ও হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠায়। হিফজুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে দায়ের কোপ রয়েছে।
খবর পেয়েই সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ পিপিএম ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএমসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ওইদিন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ দুটি বিষয়কে সামনে রেখে বড় এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। হিফজুরের সঙ্গে তার মামার জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর জের থেকে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। আবার স্ত্রীর সঙ্গেও হিফজুরের বিরোধ রয়েছে। সেটা শ্যালিকাকে নিয়ে। তাই হিফজুরকেও সন্দেহের বাইরে রাখা যাচ্ছে না।
সেই সন্দেহের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে হিফজুরকেই গ্রেফতার করলো পুলিশ।
এর আগে বুধবার (১৬ জুন) মধ্যরাতে নিহত আলিমা বেগমের বাবা আয়ুব আলী বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, হিফুজর তার মামার বাড়িতে ঘর বানিয়ে থাকেন। তার বাড়ি পাশ্ববর্তী গ্রামে। আহত হিফজুর যে ঘরে থাকতেন ওই ঘরটি তার মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত। আর পাশের আরও দুটি ঘরে তার মামারা থাকেন। হিফজুর দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।