“জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ছেলে হত্যার বিচার চাইবো। হত্যাকারীদের আর কত লাশ প্রয়োজন। ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার না পেলে প্রয়োজনে এই টিলাগড়েই আত্মহত্যা করবো। আমার কলিজার টুকরা ছেলে হত্যার বিচার চাই জীবনে আর কিছু চাওয়ার নাই। আজকে দ্বীপের ১৯তম জন্মদিন অথচ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছেলে হত্যাকারীদের বিচার চাইতে হচ্ছে পিতাকে।” এমন আর্তনাদে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন টিলাগড়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত অভিষেক দে দ্বীপের পিতা দীপক দে। আজ সোমবার নগরীর টিলাগড়ে দ্বীপ হত্যার বিচার চেয়ে এলাকাবাসীর ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে এমন আকুতি জানান তিনি।
এসময় কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, অনেক পরিবারে ছেলে সন্তানকে নিয়ে মা-বাবা জন্মদিন পালন করছে। আমাদের কপালে তো আর সেটা নেই। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আজ আমরা বাকরুদ্ধ। প্রায় ১৫ মাস থেকে আমরা ছেলের কাছ থেকে মা-বাবা বলে ডাক শুনতে পাই না। এরপরেও আসামীরা হুমকি দেয়। মামলা তুলে নিতে বাড়ি-গাড়ি দেওয়ার প্রস্তাব করে। একটি স্বাধীন দেশে একটা টগবগে তরুণকে হত্যা করে ঘাতকরা ঘুরে বেড়াবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ন্যায় বিচারের আশায় আমরা এখনও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বসে আছি। তিনি অবিলম্বে তাদের ছেলে দ্বীপ হত্যার বিচার দাবী করে বলেন, অন্যতায় এই টিলাগড়েই আত্মহুতি দিবো আমরা।
দ্বীপ হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগ নেতা মুহিবুর রহমান মুহিব, আহমদ অরুণা দে, অনিতা দেব, মদন দে, বিজয় দে, মুন্না ঘোষ, মুর্শেদ আহমদ, আমির হামজা অমর, অপু সিংহ, সৌরভ সরকার, নিলয়, অঙ্গরাজ দ্বীপ, সিয়াম, হাসনাত, শুভ কর, আদিত্য দাস, প্রমুখ।
এসময় নিহত দ্বীপের মা অনিতা দে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রধানমন্ত্রীও একজন স্বজনহারা মানুষ। স্বজন হারানোর বেদনা তিনি বুঝেন। আমরা আমাদের স্বজনকে হারিয়েছি। তিনি আমাদের ন্যায় বিচার দিবেন। এই আশায় আমরা বুক বেধে বসে আছি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাতে একদল যুবকের হামলায় সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকায় অভিষেক দে দ্বীপ নামের এক যুবক নিহত হন। নিহত দ্বীপ গ্রিনহিল স্টেট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।