এখনও কান্না থামেনি আবরারের মায়ের

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছরের এই দিনে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে। প্রিয় মুখটিকে হারানোর বেদনা কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না স্বজনরা। এখনও শোকের মাতম চলছে কুষ্টিয়ার বাড়িতে।

বাড়িতে কেউ গেলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আবরারের মা রোকেয়া খাতুন। সোমবার দুপুরে আবরার ফাহাদের কুষ্টিয়া শহরের বাড়িয়ে গেলে তাকে দেখা যায় ছোট ছেলে আবরার ফাইয়াজের সঙ্গে। বাড়িতে ঢুকতেই প্রথম যে কক্ষ সেখানেই থাকতেন আবরার ফাহাদ। সেখানে পড়ার টেবিলে সাজানো তার সব বই। শোকেসে আবরারের ব্যবহার করা নানা জিনিসপত্র সাজিয়ে রেখেছেন মা। জামাকাপড়, আইডি কার্ড এমনকি পায়ের জুতাও রয়েছে সেখানে।

রোকেয়া খাতুন ওড়না দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলেন, মামলার এজাহার আমি এখনও পড়িনি। ওরা কীভাবে আমার ছেলেকে মেরেছে-এসব পড়লে আমি সহ্য করতে পারব না। তবে মন শক্ত করে রেখেছি, রায় ঘোষণার পর এজাহারটি পড়ে দেখব-ওরা কত কষ্ট দিয়ে আমার সোনার ছেলেকে মেরেছে।

রোকেয়া খাতুন বলেন, বুয়েটে চান্স পাওয়ার পর আমি রাব্বীকে ক্যাম্পাসের হোস্টেলে রাখতে যাই। কিন্তু কর্তৃপক্ষের টানানো তালিকায় তার নাম ছিল না। পরে আমি প্রভোস্টের সঙ্গে দেখা করি। আরেকটি তালিকা টানানো হবে বলে তিনি আমাকে অপেক্ষা করতে বলেন। দ্বিতীয় তালিকায় রাব্বীর হোস্টেলের তালিকায় ক্যাম্পাসের ভেতরের মসজিদের নাম আসে। তখন প্রভোস্টের সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, ওদের জন্য মসজিদই নিরাপদ। কিন্তু সে সময় আমি প্রভোস্টের সেই কথার ইশারা বুঝতে পারিনি। তখন তার ভাষা বুঝতে পারলে আমি রাব্বীকে কখনোই বুয়েটে ভর্তি করতাম না।

গত বছরের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারতে হওয়া চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ।

এর জের ধরে ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *