করোনায় মারা গেলেন অভিনেতা সাদেক বাচ্চু

বিনোদন ডেস্ক :: না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এ অভিনেতা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাদেক বাচ্চুর মেয়ে সাদিকা ফাইরুজ মেহজাবীন।

সাদেক বাচ্চু কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত ছিলেন। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ৬ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এর পর ১২ সেপ্টেম্বর জানা যায়, এ অভিনেতা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পরে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে তাকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে ছিলেন এ অভিনেতা। তাকে কৃত্রিমভাবে শতভাগ অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছিল। তার ফুসফুসের ৮০ শতাংশই কাজ করছিল না।

তার সবশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী রোববার গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সাদেক বাচ্চুর স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তারা। সে কারণে রোববার দুপুরে অধ্যাপক রেদোয়ানুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে। এর পর সাদেক বাচ্চুর চিকিৎসায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। তবে তিনি যে অবস্থায়, চিকিৎসকদের আর কিছুই করার নেই।

সাদেক বাচ্চুর মেয়ে সাদিকা ফাইরুজ মেহজাবীন জানান, ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিনেতা সাদেক বাচ্চুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনার উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শুক্রবার পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছেন তারা। এতে দেখা যায় তিনি করোনা পজিটিভ।

সাদেক বাচ্চুর জানাজা ও দাফনের সময় নির্ধারণ করা হয়নি।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তা একজন লেখক হিসেবেও নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেছেন।

বেশ কিছু দিন ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত সাদেক বাচ্চু। নব্বইয়ের দশকে পরিচালক এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয় করে পরিচিতি পান তিনি। রেডিও বা টেলিভিশনের আগে তিনি অভিনয় শুরু করেন মঞ্চে। তার নাট্যদলের নাম মতিঝিল থিয়েটার; আমৃত্যু তিনি দলটির সভাপতি ছিলেন।

মহিলা সমিতির মঞ্চে এক নাটকে সাদেক বাচ্চুর অভিনয় দেখে তাকে বিটিভিতে ডেকে নেন প্রযোজক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা হাজারের বেশি। প্রথম অভিনীত সিনেমা শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’।

বহুমাত্রিক এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে– ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবন নদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখী’ প্রভৃতি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *