২ শিশুকে পাঁচতলা থেকে ছুড়ে ফেলে দিল পাষণ্ড প্রতিবেশী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে খেলা করার সময় হইচই করায় শিবকুমার গুপ্ত (৫৫) নামে এক ব্যক্তি তিন শিশুকে পাঁচতলা থেকে ফেলে দিতে যাচ্ছিল।

এ সময় প্রতিবেশীরা এসে এক শিশুকে ধরে ফেললেও অন্য দুই শিশুকে নিচে ছুড়ে ফেলে দেন ওই পাষণ্ড। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বড়বাজার থানা এলাকার ১১৩ নেতাজি সুভাষ বসু রোডের একটি ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এতে একটি শিশু ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং অন্যটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা মুরলিধর শর্মা জানান, রোববার রাতেই খুন এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে শিবকুমার গুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওই তিনটি শিশু বারান্দায় প্রায়ই হইহই করে খেলত, রোববারও খেলছিল। মেয়েটি চার বছরের, সঙ্গে তার দুই বছরের ভাই। সঙ্গী অন্য ছেলেটির বয়স ৬ বছর।

বাচ্চাদের হুড়োহুড়ি চেঁচামেচি নিয়ে পাশের ঘরের প্রতিবেশী মাথা গরম করত প্রায়ই। রোববার রেগেমেগে তিনটি বাচ্চাকেই পাঁচতলা থেকে ফেলে দিতে যাচ্ছিলেন তিনি।

দেখতে পেয়ে এক মা কোনো রকমে মেয়েটিকে ধরে ফেলেন। কিন্তু অন্য দুটি বাচ্চাকে সত্যিই ছুড়ে ফেলা হয় নিচে। দুই বছরের শিশু শিবম সাউ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ছয় বছরের শিশু বিশাল সাউ মুমূর্ষু অবস্থায় নীলরতন সরকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ আগে বাচ্চাদের খেলাধুলা নিয়েই প্রতিবেশী বিক্রম বাবুর সঙ্গে শিবকুমারের ঝগড়া হয়। পাশাপাশি ঘরের সামনে সরু বারান্দা।

সেখানেই সবসময় বাচ্চাগুলো খেলত। তাতেই বিরক্ত হয়ে বিক্রম বাবুদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়েছিলেন শিবকুমার।

প্রতিবেশীদের অভিযোগ, তখনই শিবকুমার হুমকি দিয়েছিল- বাচ্চারা ফের এ রকম করলে তাদের ওপর থেকে ফেলে দেয়া হবে। কিন্তু সেটি যে সত্যিই ঘটবে, তা ভাবতে পারেননি কেউই।

আহত বিশাল সাউয়ের বাবা বুধন সাউ ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন। এমন যে ঘটে যাবে, ভাবতে পারেননি। পুলিশ জানায়, বিশালকে ছুড়ে ফেলা হলে সে প্রথমে তারের ওপরে পড়ে। সেখান থেকে দোকানের টিনের চালে পড়ে তার পর মাটিতে পড়ে। এ কারণেই বেঁচে যায় সে।

প্রতিবেশী তারা দেবী সোনকার জানান, রোববার সন্ধ্যায় তার চোখের ওষুধ নিচে পড়ে গিয়েছিল। একজনকে তুলে দেয়ার জন্য বলবেন বলে বারান্দায় এসে দেখেন, সরু গলির ওপর পড়ে রয়েছে একটি বাচ্চা।

আরেকটি বাচ্চাকে চ্যাংদোলা করে তুলে ফেলে দিচ্ছে শিবকুমার! তিনি বলেন, আমি চিৎকার করে ওঠি। কিন্তু ততক্ষণে ও বাচ্চাটিকে ফেলে দেয়।

অরবিন্দ সাউ নামে আরেক প্রতিবেশী বলেন, নানা বিষয়ে দুই পরিবারে গোলমাল হতো। লকডাউনে টানা বাড়ি থাকায় ঘন ঘন ঝামেলা হতো।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *