সিলেট বিভাগের কমলগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মুনিপুরীদের ১৭৭ তম মহারাশলীলা সম্পন্ন

কমলগঞ্জ, রাশলীলা থেকে ফিরেঃ সুমন ইসলাম,
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরে মণিপুরী সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব মহারাসলীলা বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিসমাপ্তি ঘটে।

মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘ’র আয়োজনে মাধবপুর ও আদমপুরের উন্মুক্ত ৩টি মঞ্চে মঙ্গলবার সকাল ১১ ঘটিকায় শুরু হয় রাখাল নৃত্য-সন্ধ্যায় গুণীজন সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।রাসলীলার মূল আনুষ্ঠানিকতা রাত ১১:৩০ মিনিটে শুরু হয়ে মণিপুরী নৃত্যের ধ্রুপদ ভঙিমায় রাধাকৃষ্ণের রাসনৃত্য পরদিন বুধবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ।

মণিপুরীদের সব থেকে বড় উৎসব এ রাসপূর্ণিমা। অষ্টাদশ শতাব্দীতে মণিপুরের রাজা মহারাজ ভাগ্যচন্দ্র প্রবর্তিত শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলানুকরণ বা রাসপুর্ণিমা নামের মণিপুরিদের সর্ববৃহৎ এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রায় দেড়শত বছর ধরে (আনুমানিক ১৮৪৩ খ্রী: থেকে) পালিত হয়ে আসছে।

রাসলীলা উৎসবে কমলগঞ্জ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। জোড়ামণ্ডপের সম্মুখ রাস্থায় দুটি চেক পোষ্ট বসিয়ে নিরাপত্তার বিষয়েটি জোরদার রেখেছিলো প্রশাসন, ছিলো গাড়ি পার্কি এর নির্দিষ্ট ব্যাবস্থা। ১৭৭তম ‘মহারাসলীলায় আদমপুর তেতইগাঁও জোড়ামণ্ড
ছিলো উৎসবমুখর পরিবেশে। মণিপুরী সম্প্রদায়ের এ বৃহত্তম উৎসব উপলক্ষে উভয় স্থানে বসেছিল বিশাল মেলা।

কার্ত্তিকের পুর্ণিমা তিথিতে দুরদুরান্তের লক্ষ লক্ষ ভক্ত-দর্শক সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের মাধবপুর জোড়ামণ্ডপের এই বিশাল ও বর্ণাঢ্য উৎসবের আকর্ষণে ছুটে আসেন। রাসলীলা উপভোগ করতে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সমাগমে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো আদমপুর তেতইগাঁও।সাদা কাগজ দিয়ে কারুকার্যময় নকশায় সাজানো মণ্ডপগুলোতে দূর-দূরান্ত থেকে জড়ো হওয়া মণিপুরী নৃত্যশিল্পীদের সুনিপুণ নৃত্যগীতি মন্ত্রমুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের।রাশলীলা দেখতে আসা , সিলেটে জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, এডঃ সাইফুর রহমাম খন্দকার রানা বলেন, রাসলীলা উৎসব শুধু মুনিপুরিদের কাছে নয় বাঙালি ধর্ম বর্ণ সকলের কাছেই অত্যন্ত জনপ্রিয় ৷ কার্তিক পূর্ণিমার রাতে এই উৎসবটি খুবই মনোমুগ্ধকর, প্রতিবছরই আসি বাঙালী ঐতিহ্য মণিপুরী সংস্কৃতি বিশেষভাবে আকর্ষণ করে ৷

সিলেটের খাদিম পাড়া থেকে আগত ঢাবি শিক্ষার্থী আবু বকর পারভেজ জানান, এবারই প্রথম এসেছেন বন্ধুমহল মিলে, রাশলীলার আয়োজন দেখে অন্যরকম একটা আনন্দ উপভোগ করেছেন সেই সাথে মণিপুরীসংস্কৃতির সাথেও পরিচিত হয়েছেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *