কুলাউড়ায় ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় আপোষের নামে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের পঞ্চম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, এ ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব করতে নানা কৌশল ও ভিকটিমের পরিবারকে আপোষে নিষ্পত্তির পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে একটি মহল। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনার ঝড় বইছে। এতে ভিকটিমের সামাজিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা শঙ্কার মুখে পড়েছে।

তবে ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণচেষ্টার শিকার ৮ বছরের ওই শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। সোমবার ২৮ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে ওই শিশুটি পার্শ্ববর্তী গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী কুটি মিয়ার বাড়িতে যায় আমলকি আনতে। এ সময় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কুটি মিয়া (৪২) ওই শিশুটিকে পথরোধ করে ২৫ টাকা পাওনা দাবি করেন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক শিশুটিকে ৩শ গজ দূরে বেলজিয়াম গাছের বাগানের ঝোঁপে নিয়ে যান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন কুটি মিয়া। এ সময় শিশুটি চিৎকার শুরু করলে বাগানের আশেপাশে থাকা লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। কুটি মিয়ার হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ওই শিশুটি ভয় পেয়ে দৌঁড়ে বাড়িতে চলে যায়।ওই শিশুর নানী জানান, আমার মেয়েকে তার স্বামী (ওই শিশুর পিতা) ছেড়ে চলে যায়। আমার মেয়ের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সে ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করছে। এজন্য নাতি-নাতনী আমার কাছে থাকে।তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমার নাতনী বাড়িতে এসে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে।

পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোতাহের উদ্দিন শিশুসহ কয়েকজন লোক আমার বাড়িতে এসে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেন এবং এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে কোন খবর যাতে না যায় সেজন্য সতর্ক করে দেন।ওই শিশুর স্বজন (সম্পর্কে নানা) জানান, আমাদেরকে বিষয়টি সমাধান করে দিবেন বলে জানিয়েছেন মেম্বারসহ স্থানীয় কয়েকজন লোক। পরে শুনেছি কুটি মিয়াকে কুলাউড়ায় এক সাংবাদিকের কাছে পাঠানো হয়েছে সংবাদ না প্রকাশের জন্য। এখনও পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের কোনও খবর আর পাইনি।কুটি মিয়ার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন আমি কিছু বলবো না। পরে জানাবো বলে ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোতাহের উদ্দিন শিশুর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত কুটি মিয়া ও ঘটনার শিকার ওই শিশুটির কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নিয়েছি। ওই শিশুর স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, কুটি শিশুটিকে জোর করে একটি ঝোঁপে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে শিশুটির চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।তিনি আরও বলেন, কুটি বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য আমাদের অনুরোধ করে। পরে তাকে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে কুলাউড়া শহরে পাঠানো হয়।

এ রকম ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা ও প্রশাসনকে না জানিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধান করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করে প্রশাসনকে বিষয়টি জানাবো।কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *